Print

সারাদিন

আগামী নির্বাচনে ডা. মুরাদেই ভরসা তৃণমূল আওয়ামী লীগের..

প্রকাশিত: ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২, ২০২২

সারাদিন ডেস্ক

ডা. মুরাদ হাসান,যিনি জাতীয় সংসদের ১৪১,জামালপুর-৪ আসন থেকে দুই বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং বর্তমান সরকারের প্রথমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং পরবর্তীতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

ডা.মুরাদের নির্বাচনী আসন জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলা। এই আসনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ, কেননা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই আসনে যে দলের প্রার্থী নির্বাচিত হয়-সে দলই সরকার গঠণ করে। এই আসনটি একসময় বিএনপির আতুরঘর ছিলো। বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদারের নির্বাচনী আসন এবং ৮ম জাতীয় সংসদের এমপি ও তৎকালীন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী আনোয়ারুল কবির তালুকদারের আসনও এই সরিষাবাড়ি। বিএনপির দৌরাত্ম্য বেশি থাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারতো না। শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচিই না ব্যক্তিগত বিভিন্ন কাজ করতেও থাকতো ভীতসন্ত্রস্ত, এরকম বহু ঘটনা সকলের জানা। এর জ্বলন্ত উদাহরণ ডা. মুরাদ হাসান, এমপি হওয়ার আগ পর্যন্ত সরিষাবাড়িতে আওয়ামী লীগের স্থায়ী কোনো দলীয় কার্যালয় ছিলো না। ডা. মুরাদ হাসান ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার সালাম তালুকদারের ভাতিজা জেলা বিএনপির সভাপতি শামীম তালুকদারকে প্রায় ৪১ হাজার ভোটে পরাজিত করে। মুরাদ হাসান জয়ী হয়েই সরিষাবাড়িতে বিএনপির আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ধীরে ধীরে ডা. মুরাদের সাহসী পদক্ষেপ ও দূরদর্শী নেতৃত্বেই সরিষাবাড়ির প্রতিটি এলাকা হয়ে উঠে আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীদের অভয়ারণ্য।

সরিষাবাড়ির বিভিন্ন এলাকার অনেক নেতাকর্মী ও বয়োজ্যেষ্ঠদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় এবং লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্ম আয়ের মানুষের জন্য মুরাদ হাসান অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। করোনাকালীন সময়ের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, মুরাদ হাসান নিম্ম আয়ের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী এবং স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছেন। তিনি প্রতিমন্ত্রী থেকেও প্রতি সপ্তাহের দুই দিন তার নির্বাচনী এলাকায় সময় দিয়েছেন। লোকমুখে শোনা যায়, আমাগোর মন্ত্রীসাবের সাথে দেহা করতে ঢাকা যাওন লাগে না।

মুরাদ হাসান একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হওয়ার ফলে, তার নিজ নির্বাচনী এলাকা সহ আশেপাশের এলাকার লক্ষাধিক রোগীকে ফ্রি হেলথ ক্যাম্প করে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছেন। দেশের সকল স্বনামধন্য হাসপাতালে মুরাদ হাসানের পরিচিত চিকিৎসক থাকায়, তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগীরা চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পায়। এছাড়াও বহু রোগীদের অপারেশন করানো থেকে শুরু করে, এলাকার অসহায় রোগীদের নিজ অর্থে চিকিৎসা করান তিনি। যা এখন পর্যন্ত তিনি অব্যাহত রেখেছেন। তার দৌলতপুরস্থ নিজ বাড়িতে গেলেই দেখা যায় বিভিন্ন রোগীদের উপস্থিতি।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরিষাবাড়ি আসনটি মহাজোট জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়, ফলে ডা. মুরাদ হাসান দলীয় মনোনয়ন পাইনি। আওয়ামী লীগ সরকার না ভেঙে নির্বাচন করায়, মুরাদ হাসান চাইলেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করতে পারতেন। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশকে তিনি অমান্য করেনি, বরং তিনিই একমাত্র দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে জয়যুক্ত করেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুরাদ হাসান পুনরায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে বিশাল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়।

সরিষাবাড়ির বিভিন্ন মাধ্যমে খোজ নিয়ে জানা যায়, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরিষাবাড়িতে মুরাদ হাসানসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী মাঠে কাজ করছেন। তন্মধ্যে, ঢাকাস্থ তেজগাও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তেজগাও কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ, সাবেক এমপি মরহুম মালেক এর সন্তান সেচ্ছাসেবক লীগের মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান হেলাল। তবে, তৃণমূলের আওয়ামী পাগল নেতাকর্মীরা আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মুরাদ হাসানকে এমপি হিসেবে দেখতে চায়। সর্বস্তরের জনগণ একমাত্র মুরাদ হাসানকেই ভরসা করে। পৌর শহরের আরামনগর বাজারের স্থায়ী একাধিক বাসিন্দা বলেন, এই আরামনগর বাজারের বিএনপির পার্টি অফিস অবস্থিত হওয়ায় আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের উপর বিএনপির সন্ত্রাসীদের অকথ্য অত্যাচার ও অসহনীয় নির্যাতনের বহু ইতিহাস আমরা জানি, মুরাদ সাহেব এমপি হয়েই এই এলাকা থেকে বিএনপি জামায়াতের সকল সন্ত্রাসীদের নির্মূল করেছেন। তারা আরও বলেন, মুরাদ হাসান ছাড়া বিএনপি জামায়াতের সাথে লড়াই করে টিকে থাকার মতো প্রার্থী দেখি না। পৌর শহরের শিমলা বাজারে কিছু ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ী এবং শ্রমজীবী মানুষদের আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে যোগ্য কে প্রশ্ন করলে তারা বলেন, আমরা মুরাদ সাবকেই চাই, কারণ তিনি আমাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকেন। আব্দুর রশীদের কথা জিজ্ঞেস করলে, তারা বলেন তিনি প্রতি নির্বাচনেই প্রার্থী হয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যানার-পোস্টার-ফেস্টুন করে সরিষাবাড়ি ছেয়ে ফেলে কিন্তু, কোনো দুর্যোগের সময় আমাদের পাশে থাকে না, করোনার সময় তার সরিষাবাড়ির অসহায় মানুষের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা নেই। যাকে আমাদের বিপদেআপদে পাশে পাইনি তাকে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ এমপি হিসেবে চায়না কারণ, তিনি প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হন, আর যখন মনোনয়ন না পায় তখন তিনি আর এলাকায় আসেন না। তিনি নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে কোনো কাজ তো করেই না, তার নিজের ভোটও তিনি দেন না। এমনকি তার অনুসারী নেতাকর্মীদের নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে নিরুৎসাহিত করেন বলেও জনশ্রুতি রয়েছে। সাধারণ মানুষ আরও বলেন, যেহেতু আব্দুর রশীদ ঢাকার এক প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে আসীন থেকে তেজগাও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হোন বারবার, সেহেতু তিনি তেজগাও থেকে নির্বাচন করলেও তো পারে, সরিষাবাড়িতে তার মতো অতিথি পাখির দরকার নেই। আরেকজন এমপি প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান হেলাল সম্পর্কে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলেন, তার পিতার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস থাকলেও তিনি জনবিচ্ছিন্ন, তিনি কয়েকমাস পর পর এলাকায় আসেন। সরিষাবাড়ির অন্তর্ভুক্ত বেশীর ভাগ ওয়ার্ড পর্যায়ের সাধারণ মানুষ তাকে চিনেও না।

Nagad
Nagad

সব মিলিয়ে, একমাত্র ডা. মুরাদ হাসানেই ভরসা পায় তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও সাধারণ মানুষ।