Print

সারাদিন

ভালুকায় ঋণের চাপ সইতে না পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ৭:৫৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০২২

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:

ময়মনসিংহের ভালুকায় ঋণের টাকা দিতে না পারায় ঘর থেকে সকল আসবাবপত্র বের করে নেয়ার অপমান সইতে না পেরে নাছরিন নাহার (৪৫) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার ভরাডোবা দুলারভিটা বাইন্নাবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার বাইন্নাবাড়ি এলাকার আনিসুজ্জামান সুরুজের ছেলে রিফাদ মিয়া (২৭) প্রতিবেশী হানিছ ফকিরের ছেলে সুদের কারবারি রুবেল ফকিরের কাছ থেকে গত ইউপি নির্বাচনের আগে সপ্তাহে এক হাজার ৫০০ টাকা সুদে ১৫ হাজার টাকা নেন। ইতোমধ্যে সুদের ৩০ হাজার টাকা পরিশোধও করা হয়। তাছাড়া সোমবার বিকেলে রুবেলকে আরও ৬০ হাজার টাকা দেয়ার কথা। কিন্তু টাকার ব্যবস্থা না হওয়ায় সন্ধ্যায় রুবেল তার স্ত্রী ইলা আক্তার, ফুফু বকুলী ও প্রতিবেশী শাহজাহানসহ কতিপয় লোক গৃহবধূ নাছরিন নাহারের সামনে তার ঘরের সব আসবাবপত্র বের করে নেয়। এ সময় বাধা দিতে গেলে রুবেল ও তার স্ত্রী ইলা আক্তার গৃহবধূ নাসরিনকে মারধর করে। এতে অপমানিত হয়ে রাগে ও ক্ষোভে পাশের ঘরের আড়ার সাথে গলায় উড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। খবর পেয়ে ছেলে রিফাদ মাকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করেন।

ছেলে রিফাদ মিয়া জানান, ১৫ হাজার টাকার জন্য রুবেলকে ইতোমধ্যে ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়। কিন্তু ঘটনার দিন আরও ৬০ হাজার টাকা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় ঘর থেকে আসবাবপত্র বের করে নেয় এবং তার মাকে মারধরও করা হয়।

রিফাদের বোন কনিকা অভিযোগ করে বলেন, তার মাকে রুবেল ও তার স্ত্রী ইলা হত্যা করে পাশের ঘরের আঁড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখে এবং ঘরের সব আসবাবপত্র নিয়ে যায়। তার মা আত্মহত্যা করতে পারেন না।

প্রতিবেশীরা জানায়, গত ইউপি নির্বাচনে ইউপি সদস্য পদে নির্বাচন করার জন্য টাকার দরকার হলে রিফাদ মিয়া ব্যাংকের চেক দিয়ে ২০ লাখ টাকার চুক্তিতে অপর প্রতিবেশী মৃত আজিজ সরকারের ছেলে সুদের কারবারি খাইরুল ইসলামের (৪৫) কাছে ২০ শতাংশ জমি বিক্রি করেন। কিন্তু তাকে সাত লাখ টাকা দেয়া হলেও বাকি টাকা না দিয়ে উল্টো চেকের মামলা দিয়ে হয়রানি করেন। রিফাদের মায়ের মৃত্যুর জন্য ওই ঘটানটিও দায়ী।

Nagad
Nagad

তারা আরও বলেন, এই পাড়ায় বিকেল থেকে শুরু হয়ে রাত পর্যন্ত চলে বিভিন্ন ধরনের জুয়ার আসর। আর ওইসব জুয়ার টাকা যোগান দেন স্থানীয় সুদের কারবারি রুবেল ও খাইরুল। টাকা পরিশোধ করতে না পারলে জমি লিখে নেয় তারা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রুবেল ও খাইরুলের মোবাইল নম্বরে বার বার চেষ্টা করলেও ফোন কেটে দেয়ার তাদের বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি।

ভালুকা মডেল থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, গৃহবধূর লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।