Print

সারাদিন

ঠাকুরগাঁওয়ে আমনের অধিক ফলন, দামে খুশি কৃষকরা

প্রকাশিত: ৩:২৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৯, ২০২২

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও কৃষিতে স্বনির্ভর। এই সময়ে আমন ধানের ঘ্রাণই বলে দেয় এখানে শুরু হয়েছে নবান্নের আমেজ। এরই মধ্যে এ জেলায় শুরু হয়েছে আমন ধান কাটা ও সংগ্রহের কাজ।সকাল থেকে শুরু হয় কৃষক ও একদল শ্রমিকের ধান কাটার কাজ,তাদের এই কাজ শেষ হয় সূর্যাস্তের সময়ে। এবার বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ধানের দামেও স্বস্তি বোধ করছেন এ এলাকার ‍কৃষকরা।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, আমনের সোনালি শীষ দোল খাচ্ছে হেমন্তের মিষ্টি বাতাসে। পাকা ধান কাটছেন কৃষক। কেউ আঁটি বেঁধে ধানের বোঝা কাঁধে, কেউ ভ্যানে আবার কেউ গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। সেখানে এসব ধান মাড়াই, পরিষ্কার এবং সেদ্ধ করে শুকাতে ব্যস্ত কৃষাণ-কৃষাণীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মতে, জেলায় এই মৌসুমে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমি ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ লাখ ২৯ হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে আরো ১০০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে আমন। অর্থাৎ এবার জেলায় মোট ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে আমন। এ পর্যন্ত মাত্র ২০ শতাংশ অর্থাৎ ১৪ হাজার ৫৮২ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। এতে ফলন হয়েছে ৫ হাজার ৭৩০ মেট্রিক টন। হেক্টরপ্রতি গড় চাল উৎপাদন হয়েছে ৩ দশমিক ৪৮ মেট্রিক টন, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ দশমিক ১৩ মেট্রিক টন চাল। লক্ষ্যমাত্রার থেকে আবাদ ও ফলন দুটিই বেশি।

কৃষকরা বলছেন, এবার সার ও কীটনাশকের দাম বেশি হলেও ধানের ফলন বেশি হওয়ায় ও দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন তারা। তবে অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম কমালে তাদের জন্য ভালো হতো। যদি তারা সময় মতো কীটনাশক পেত তাহলে লক্ষ্যমাত্রার থেকে অনেক বেশি ফসল উৎপাদন হতো।

কৃষকেরা আরো জানান,এবার সার ও কীটনাশকের দাম অনেক বেশি হলেও ধানে কীটনাশক স্প্রে করতে হয়েছে দু-তিনবার। অন্যান্য বার পোকামাকড় বেশি হওয়ায় কীটনাশক স্প্রে করতে হয় পাঁচ হয়েছে সর্বোচ্চ ১০-১২ হাজার টাকা। এক বিঘা জমির ধান বিক্রি করেছি ৩৬ হাজার টাকায়। এতে এবার ধানের ফলন ও দাম বেশি হওয়ায় আমরা বেশ লাভবান।

তবে ধানের দাম পেয়েও পুরোপুরি খুশি নন সদর উপজেলার অনেক কৃষক।তারা বলেন, সরকার যদি অন্যান্য জিনিসের দাম কমাতো তাহলে আমরা, কৃষকরা, আরো বেশি খুশি হতাম।সেই সাথে প্রতিটি কৃষক যদি তাদের নির্ধারিত সময়ে কীটনাশক পেত তাহলে তারা আরো বেশি ফলন উৎপাদন করতে সক্ষম হতো এবং লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি পেত।কৃষকরা যেন তাদের প্রয়োজন মত সার ক্রয় করতে পারে, যেন তাদের সার এর জন্য হয়রানি না হয় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কাছে জোর দাবি জানায়।

Nagad
Nagad

স্থানীয় বাজারে বর্তমানে আগাম জাতের হাইব্রিড ধানিগোল্ড ধানের ৭৫ কেজির বস্তা ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩৫০ এবং সুমন স্বর্ণ জাতের ধানের বস্তা ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৪৫০ টাকায়। দাম আরো বাড়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানান সদর উপজেলার ধান-চাল ব্যবসায়ীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষিবিদ মোছাম্মাৎ শামীমা নাজনীন জানান, জেলায় লক্ষ্যমাত্রার থেকে আমান আবাদ বেশি ও উৎপাদন ভালো হয়েছে। বর্তমানে ধানের যে মূল্য এমনটা থাকলে কৃষক লাভবান হবেন।

সারাদিন. ১৯ নভেম্বর.