Print

সারাদিন

প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে মরিয়ম মান্নানের ‘অপহরণের নাটক’: পিবিআই

প্রকাশিত: ৩:৩৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩

খুলনা সংবাদদাতা

জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে মরিয়ম মান্নানের নেতৃত্বে তার মা রহিমা বেগমকে ‘অপহরণের নাটক’ সাজানো হয়েছিল। আলোচিত খুলনার রহিমা বেগমকে নিয়ে অপহরণ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে খুলনা মহানগর হাকিম আদালতে আলোচিত ওই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান পিবিআই কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এইসব তথ্য জানান।

খুলনা পিবিআই-এর পুলিশ সুপার বলেন, মরিয়ম মান্নান শুধু প্রতিবেশীদের ফাঁসানোর জন্যই একাধিক মামলা চলমান থাকতেই এই নাটক সাজান। মূলত রহিমা বেগম অপহৃত হননি, তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেন। তিনি আরও বলেন, আমরা রহিমা বেগমের নিখোঁজ হওয়ার ব্যপারে তদন্তের পর রহিমা বেগম ও তার দুই মেয়ে আদুরি এবং মরিয়ম মান্নানের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। রহিমা বেগম ২৮ দিন আত্মগোপনে ছিলেন। এ কয়দিন তিনি বিভিন্ন স্থান বদল করেন। তিনি ঢাকা থেকে বান্দরবান হয়ে ফরিদপুরের আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতে যান। আমরা খবর পেয়ে ওখান থেকে তাকে অক্ষত উদ্ধার করি।

সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, “জমি নিয়ে মরিয়ম মান্নানদের সাথে প্রতিবেশীদের ঝামেলা চলছিল। মরিয়ম বিভিন্ন সময় ওই প্রতিবেশীদের নামে জমি নিয়ে মামলা দিয়েছেন আর প্রতিবেশীরা প্রতিবারই সংশ্লিষ্ট নথিপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে গেছেন। সন্দেহভাজন হিসেবে মামলার এজাহারে যাদের নাম দেওয়া হয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে না চাওয়ায় সৎবাবাকেও গ্রেপ্তার করিয়েছিলেন মরিয়ম। সর্বশেষ প্রতিবেশীদের ফাঁসাতেই ওই নাটক করা হয়েছে।”

‘আত্মগোপনে’ যেতে ‘নিখোঁজের দিন’ মরিয়ম মাকে মুঠোফোনের মাধ্যমে এক হাজার টাকাও পাঠিয়েছিলেন উল্লেখ করে খুলনা পিবিআই-এর পুলিশ সুপার জানান, ওই ঘটনার আগেও রহিমা বেগম বহুবার কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে আবার ফিরে আসেন। এসব ঘটনা পরিবারের সদস্যরা জানতেন। তবে ওই ঘটনা ছিল পরিকল্পিত।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা বেগম নিজ বাসার উঠানের নলকূপ থেকে পানি আনতে গিয়ে আর ঘরে ফেরেননি। সে সময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওই বাড়িতেই ছিলেন। ওই রাতেই (২৭ আগস্ট) রহিমা বেগমের ছেলে দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরের দিন ২৮ আগস্ট রহিমা বেগমের আরেক মেয়ে আদুরি আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে খুলনার দৌলতপুর থানায় মাকে অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

Nagad
Nagad

এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হয়। ৮ দিন পর ২৪ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

সারাদিন/১৩ ফেব্রুয়ারি/এমবি