প্রকাশিত: ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০২৩
সারাদিন ডেস্ক
আরও এক মাইলফলকের দ্বারপ্রান্তে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সড়কপথ চালুর ১০ মাসের মাথায় এবার প্রস্তুত রেলপথ। ছয় দশমিক ৬৮ কিলোমিটারের পদ্মা সেতুর রেলপথের কাজ সম্পন্ন করেছেন দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা। আজ ভাঙা থেকে মাওয়া পর্যন্ত চলবে পরীক্ষামূলক ট্রেন।
প্রথমবারের মতো আজ মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) ট্রেন পাড়ি দেবে পুরো পদ্মা সেতুতে।
প্রকৌশলীরা জানান, গত ২৯ মার্চ (বুধবার) রেলপথের সর্বশেষ সাত মিটার অংশের ঢালাই দেওয়ার মাধ্যমে কাজ শেষ হয়। তবে, ঢালাই করা অংশ শক্ত হয়ে ট্রেন চলার জন্য উপযোগী হতে ৪৮ ঘণ্টা সময়ের প্রয়োজন ছিল। ৩১ মার্চ শুক্রবার বিকেলে নির্ধারিত ৪৮ ঘণ্টা শেষ হয়েছে।
ওই দিন প্রকৌশলীদের পরীক্ষায় ঢালাই করা অংশ ট্রেন চলার জন্য উপযোগী হয়ে উঠেছে বলে নিশ্চিত করা হয়। অর্থাৎ, বর্তমানে ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত ছয় দশমিক ৬৮ কিলোমিটার পুরো পাথরবিহীন রেলপথ। এখন শুধু ট্রেন চলার অপেক্ষায় পদ্মা সেতু।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর পুরোদমে ট্রেন চলাচল শুরু হলে আরও একটি স্মারক যোগ হবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে।
গত বছর ২৫ জুন বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৬ জুন থেকে সড়কপথের দুয়ার খুলে যায়। অপেক্ষায় ছিল সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল। পদ্মা সেতু চালুর ৯ মাস ১০ দিনের মাথায় অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার। জীবনের প্রথম মাদারীপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ রেলগাড়ি দেখবে এটি তাদের কাছে পরম পাওয়া।
একই সঙ্গে স্বল্প খরচে মানুষের যাতায়াত সুবিধা, পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে গতি আসবে, ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসার ঘটবে। চাঙ্গা হবে দেশের অর্থনীতি। বিশেষ করে স্বল্প খরচে কৃষিপণ্য রাজধানীতে নিতে পারবেন ভাটি অঞ্চলের কৃষকরা। এরই মধ্য দিয়ে দেশবাসী আরও একটি মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছে
প্রকৌশলী সূত্র বলছে, বিশ্বমানে প্রস্তুত করা হয়েছে সেতুর রেলপথ, যা শত বছরের বেশি সময় টেকসই থাকবে।
প্রকৌশলীরা জানান, ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল সেতু ও দুই পাশের ভায়াডাক্ট সেতু মিলিয়ে পদ্মা রেল সেতুর দৈর্ঘ্য ছয় দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। মূল সেতুতে ১০ হাজার ৭৯০টি স্লিপার স্থাপিত হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের আটটি স্লিপার ছাড়া বাকি সব কংক্রিটের তৈরি। সিএসসি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্টের (সিএসসি) তত্ত্বাবধানে চলছে পদ্মা সেতুর এই রেলসংযোগ প্রকল্পের কাজ। এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। পদ্মা সেতু চালুর পর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের ২১ জেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে। নতুন রেলপথে যাতায়াতে রাজধানী ঢাকা থেকে খুলনার দূরত্ব কমবে ২১২ কিলোমিটার।