প্রকাশিত: ৩:২৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০২৩
সারাদিন ডেস্ক
সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় মৃত্যুঝুঁকিতে পড়া মাহবুবা রহমান আঁখি মারা গেছেন। দুপুর সোয়া ২টার দিকে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান তার স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন। তিনি বলেন, চিকিৎসকরা বলছেন মারা গেছে। আমার সবকিছুই শেষ।
রোববার (১৮ জুন) দুপুরে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জানা গেছে, গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ইডেন কলেজের ছাত্রী গৃহবধূ মাহবুবা রহমান আঁখি। তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল বলে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে তার সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা।
প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি করা হয় মাহবুবা রহমান আঁখিকে। তখন ডা. সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। তারপরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন। আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী বলেন, আঁখিকে যখন ওটিতে ঢোকানো হয় তখনো ডা. সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে আছেন কি না জানতে চাই। কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি আছেন এবং তিনিই চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন না। রোগীর কোনোরকম চেক-আপ ছাড়াই ডেলিভারির কাজ শুরু করে দেন অন্যরা।
এ সময় ডা. মিলি ওই প্রসূতির পেট কাটতে গিয়ে মূত্রনালি ও মলদ্বার কেটে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়ে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অজ্ঞান অবস্থায় সিজার করে বাচ্চা বের করা হয়। এতে বাচ্চার হার্টবিট কমে গেলে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে।
এ অব্স্থায় স্বামী ইয়াকুব আলী সেন্ট্রাল হাসপাতালের কোনো সহযোগিতা না পেয়ে পরে তার স্ত্রীকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করান।
এ ঘটনায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগ এনে গত বুধবার (১৪ জুন) রাতে ধানমন্ডি থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন ইয়াকুব আলী সুমন।
এদিকে, ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর মামলায় গ্রেপ্তার ডা. শাহজাদী ও ডা. মুন্না আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৬ জুন) বিকেলে অধিপ্তরের উপপরিচালক ডা. আবু হোসেন মঈনুল আহসানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল পরিদর্শন শেষে বলা হয়েছে, সেন্ট্রাল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) ও জরুরি সেবার মান সন্তোষজনক নয়। এ অবস্থায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত হাসপাতালটির অপারেশন থিয়েটারের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে ভুক্তভোগীর চিকিৎসক ড. সংযুক্তা সাহা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লিখিত অনুমোদন ছাড়া পরবর্তী সময়ে সেন্ট্রাল হাসপাতালে কোনো বিশেষজ্ঞ সেবা দিতে পারবেন না।