প্রকাশিত: ২:০৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০২৩
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি আমলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন বেশ শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে। দেশের উন্নয়ন আজকে বিরোধী দল দেখতে পায় না। তারা আজ চোখ থাকতেও অন্ধ।
প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার (১১ নভেম্বর) দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন, কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনসহ বেশ কিছু প্রকল্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটি বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি গর্বের দিন। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে সত্যি আমি খুব আনন্দিত। একটা কথা দিয়েছিলাম, কথাটা রাখলাম।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত শুধু ধ্বংস করতে জানে, সৃষ্টি করতে জানে না। গত ১৫ বছরে অনেক এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
পঞ্চগড় থেকে যেন কক্সবাজার আসা যায় সেই ব্যবস্থাও করতে হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একইভাবে রাজশাহী, সুন্দরবন থেকে যেন আসা যায় সেটিও করতে হবে। কক্সবাজারবাসীকে অনুরোধ করব তারা যেন এখন আমাদের দেশের অন্য অঞ্চলগুলো ঘুরে দেখে আসেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ট্রান্স-এশিয়ান নেটওয়ার্ক সঙ্গে সংযুক্ত হতে চায়। আমরা আধুনিক রেল স্টেশন বানিয়েছি। আপনারা এটা যত্ন নিয়ে ব্যবহার করবেন। কোনো কিছু নষ্ট করবেন না।’
এর আগে বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে কক্সবাজারের উদ্দেশে ঢাকা থেকে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে সড়ক পথে আইকনিক রেলস্টেশনে যান তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীরা নেচে-গেয়ে অভ্যর্থনা জানান। সেখানে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার রেললাইনে রেল চলাচলের জন্য উন্মুক্ত এবং কক্সবাজারে আইকনিক রেলস্টেশন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে সরাসরি ঢাকা থেকে ট্রেনে আসা যাবে কক্সবাজার। এই রেলওয়ে স্টেশনটি সাজানো হয়েছে আইকনিক ঝিনুকের মতো করে। যাত্রী ও পর্যটকেরা এখানে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এই রুটের সর্বনিম্ন ভাড়া মেইল ট্রেনে ১৮৮ টাকা আর আন্তনগর এসি বার্থে সর্বোচ্চ ভাড়া ১ হাজার ৭২৫ টাকা
এ রেলপথ নির্মাণের আগে কক্সবাজারের সঙ্গে কোনো রেল যোগাযোগ ছিল না। শুরুতে এটি ছিল দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প। এতে মোট ১২৯ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণের কথা ছিল। পরে রামু থেকে ঘুমধুম অংশের কাজ স্থগিত করা হয়। এখন চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ছিল এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করার পর ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকায়। সেই হিসেবে কিলোমিটার প্রতি খরচ হচ্ছে প্রায় ১৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু কক্সবাজারে স্টেশন নির্মাণেই ব্যয় হয়েছে প্রায় ২১৫ কোটি টাকা। পুরো প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ১৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। বাকি ৪ হাজার ১১৯ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে নিজস্ব তহবিল থেকে।