প্রকাশিত: ৪:২৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৬, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভোট দেওয়া গণতান্ত্রিক অধিকার। ভোটদানে ভোটারদের বাধা দেওয়া বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা বেআইনি। এ বেআইনি কাজ যারা করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বিভিন্ন নির্বাচন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে মিরপুর-২ নম্বর এলাকায় মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন র্যাব ডিজি। এ সময় তিনি দেশবাসীকে নিজ নিজ এলাকায় অবস্থানের আহ্বানও জানান।
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এক এলাকার মানুষ অন্য এলাকায় গেলে তাকে নাশকতাকারী হিসেবে আমরা সনাক্ত করবো না। তবে জানতে চাইবো, আমরা তাকে ওয়াচ করবো। আপনি কেন এসেছেন, কি প্রয়োজন আপনার। আপনি অন্য কোনো কাজে ইনভলভ আছেন কিনা। যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়া কেউ কোথাও যাবেন না। নিজ নিজ এলাকায় থাকবেন।
র্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেন, এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন এরই মধ্যে আমরা সেটা সম্পন্ন করেছি। আমি বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। দেখে মনে হয়েছে সব ঠিক আছে, সুন্দর পরিবেশ।
তিনি বলেন, ভোট মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। প্রতি ৫ বছর পর একবার মানুষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়। ৭ জানুয়ারি সব শ্রেণি-পেশার মানুষ নির্বিঘ্নে যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে সেজন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
প্রশ্নের উত্তরে র্যাব ডিজি বলেন, নাশকতার ব্যাপারে আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল- এ ধরনের নাশকতা ঘটনা ঘটতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই ভোট যারা বয়কট করেছেন বিশেষ করে জামায়াত-বিএনপির কথা আমরা জানি। আমরা গতকাল তিনজনকে পিকআপ করেছি। তাদের কাছে পেট্রোল বোমা পাওয়া গেছে ২৮টি, ককটেল পাওয়া গেছে ৩০টি। তাদেরকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, যেকোনো ঘটনা যখন ঘটে আমরা অবশ্যই তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। কারণ, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনা আন্ডার ইনভেস্টিগেশন। তথ্য পেলে আমরা অবশ্যই আপনাদের জানাবো। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এমন কোনো থ্রেট বা হুমকি তৈরি হয়নি, এমন কোনো আশঙ্কা নেই যে মানুষ নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে আসতে পারবে না। শুধু র্যাব ফোর্সেস না সব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। এখন পর্যন্ত সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চমৎকার স্বাভাবিক। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারবেন।
খুরশীদ আরও বলেন, আমরা নির্বাচন উপলক্ষে তিনটি ফেজে কাজ করছি। নির্বাচনী পূর্ববর্তী অবস্থা আজকে থেকে শেষ। আগামীকাল হবে নির্বাচন। এই নির্বাচনে যারা ভোট দিতে আসবেন আমাদের কাজ তাদের নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে আসা নিশ্চিত করা। ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন সেটি নিশ্চিত করা। যারা নির্বাচনী কাজে সংশ্লিষ্ট এবং ভোটকেন্দ্র রয়েছে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
নির্বাচন পরবর্তী পর্যায়ে যারা জয়ী হবেন বা পরাজিত হবেন তাদের মধ্যেও পরস্পর ঝামেলা হয়, সংঘর্ষ হয়। নির্বাচন পরবর্তী পর্যায়ে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে সেজন্য আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে। সুতরাং ভয় পাওয়ার বা আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কি ইন্টেলিজেন্স দুর্বলতা রয়েছে? পর্যাপ্ত তথ্য থাকার পরও কেন নাশকতা ঠেকানো যাচ্ছে না? প্রশ্নের উত্তরে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, ২০১৩-১৪ সালের দিকে আমি রাজশাহীর এডিশনাল ডিআইজি ছিলাম। সে সময়ের কথা যদি আপনি মনে করেন, সে তুলনায় এই বছরে তার ৩০ শতাংশ নাশকতাও নেই। আর ইন্টেলিজেন্স দুর্বলতা যেটি, হ্যাঁ আমাদের কাছে তথ্য ছিল। কিন্তু কোন ধরনের তথ্য ছিল? নাশকতা ঘটনা ঘটতে পারে! কিন্তু কোথায় হবে এটা জানা কিন্তু ডিফিকাল্ট। তবে আমাদের নজরদারি অব্যাহত ছিল। যে কারণে আমরা রাতেই ইনস্ট্যান্ট বাই দিস টাইম কিছু ধরেছি। তদন্ত চলছে দেখি কি পাওয়া যায়।
আপনারা (র্যাব) অনসাইট আইডেন্টিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম (ওআইভিএস) নামে একটি প্রযুক্তি নিয়ে এসেছেন। আপনারা কি বলতে চাচ্ছেন, এক এলাকার মানুষ আগামীকাল আরেক এলাকায় যেতে পারবে না, বা চলাচল করতে পারবে না? উত্তরে র্যাব ডিজি বলেন, শুধুমাত্র কেন্দ্রভিত্তিক কেন্দ্রের সামনে বহিরাগতরা যেতে পারবেন না। এক এলাকার মানুষ অন্য এলাকায় অবশ্যই চলাচল করতে পারবেন।এক এলাকার মানুষ অন্য এলাকায় গেলে তাকে নাশকতাকারী হিসেবে আমরা সনাক্ত করবো না। তবে জানতে চাইবো, আমরা তাকে ওয়াচ করবো। আপনি কেন এসেছেন, কি প্রয়োজন আপনার।