প্রকাশিত: ২:৪৪ অপরাহ্ণ, মে ১৪, ২০২৪
লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটে খরচ কম লাভ বেশি হওয়ায় ক্রমেই বাড়ছে ভুট্টার চাষির সংখ্যা। প্রাপ্ত তথ্যমতে জেলায় ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছরে মাত্র ৪০ একর জমি দিয়ে ভুট্টা চাষ শুরু হয়।
জেলার সীমান্তবর্তী দুই উপজেলা পাটগ্রাম-হাতীবান্ধা অঞ্চলে ভুট্টা চাষ বাড়তে থাকে। বর্তমানে জেলার ব্র্যান্ডিং নাম ‘ভুট্টায় ভরা সবার ঘর,লালমনিরহাট স্বনির্ভর’। জেলার ব্রান্ডিং ফসল ভুট্টা হলেও এখনো গড়ে ওঠেনি ভুট্টা প্রসেসিং কেন্দ্র বা সংরক্ষণাগার। এতে ভুট্টার ফলন ভালো হলেও ন্যায্য মূল্য নিয়ে হতাশায় থাকতে হয় চাষিদের।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী এ বছর সমতল ও চরাঞ্চলে উৎসাহ নিয়ে লাখো কৃষক চাষ ৩২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন। এবার ভুট্টা চাষে ৩ লক্ষ ৩০ হাজার লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে। জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার ভুট্টা চাষী রিফাত মিয়া বলেন, গত পাঁচ বছর ভুট্টা চাষ করছি। ভুট্টা চাষে কম খরচে বেশি লাভ হয়। লালমনিরহাটের ব্রান্ডিং ফসল ভুট্টা হলে ভুট্টা সংরক্ষণাগার বা ভুট্টা প্রসেস কেন্দ্র নেই। ফলে ক্ষেত থেকে ভুট্টা ঘরে তুলেই স্বল্প লাভে বিক্রি করতে হয়। এতে মধ্যস্থতাকারীরা কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলার এলাকার মোহাম্মদ আলী ভুট্টা চাষি আজিজার রহমান বলেন, ভুট্টা চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে তবে যে লাভ কৃষকের হওয়ার কথা সেটি থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে ভুট্টা নির্ভর শিল্প কারখানা না থাকায়। একই এলাকার আকবর হোসেন বলেন, বর্তমানে সার, বীজ ও দিনমজুরের মজুরী উর্ধমূখী তাই ভুট্টা চাষে ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া ভুট্টা সংরক্ষণ করে দেরিতে অধিক মূল্যে বিক্রি করার পদ্ধতি নেই এখানে।
লালমনিরহাটে ভুট্টা নির্ভর কারখানা বা ভুট্টা সংরক্ষণ করে রাখার ব্যবস্থা থাকলে কৃষকরা অধিক লাভবান হতো।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর লালমনিরহাটের প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ শাহ্ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, জেলার জমি ভুট্টা চাষ উপযোগী হওয়ায় ফলন বেশি হচ্ছে। এতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এবছর ইতিমধ্যে ৭০% ভুট্টা কর্তন হয়েছে। কৃষকরা নিজেদের গুদামে ভুট্টা সংরক্ষণ করে থাকে, এই জেলায় তেমন কোনো ভুট্টা সংরক্ষণগার নেই।আমরা কৃষকদের সকল ধরণের পরামর্শ প্রদান করছি। অনেক কৃষক তামাক চাষ পরিহার করে ভুট্টা চাষে মনোযোগী হয়েছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, লালমনিরহাটে একটি ভুট্টা প্রসেসিং কেন্দ্রের প্রয়োজন। আমরা ইতিমধ্যে ভুট্টাকে কেন্দ্র করে একটি প্রস্তাবনা রেখেছি। যাতে কৃষকরা ভুট্টাগুলো যথা নিয়মে প্রসেস করতে পারে। স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী ভুট্টা নির্ভর শিল্প কারখানা গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। প্রয়োজনে তাদের বিসিকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হবে। বাংলাদেশের শিল্পপতি ও উদ্দোক্তাদের দৃষ্টি আহবান করে জেলা প্রশাসক আরো বলেন, লালমনিরহাটে কোনো শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা ভুট্টা নির্ভর প্রতিষ্ঠান গঠে তুলতে চাইলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।