Print

সারাদিন

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বাধ্যতামূলক করা দরকার: আব্দুল মোমেন

প্রকাশিত: ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ২১, ২০২৪

সারাদিন ডেস্ক

‘অল্প কিছু’ দুর্নীতিপরায়ণ আমলার কারণে পুরো আমলাতন্ত্র ‘বদনামের ভাগিদার’ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন- সরকারি কর্মচারীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বার্ষিক হিসাব বাধ্যতামূলক করা এখন সময়ের দাবি। কিছু সংখ্যক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারণে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এসব ব্যাপারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করলে দুর্নীতি কমবে।

তিনি বলেন, কালো টাকাকে শতকরা ১৫টাকা কর দিয়ে সাদা করার ঘোষণায় যারা সৎ করদাতা তারা হতাশ হয়েছেন। কালো টাকা সাদা করার সুযোগের পরিমার্জন প্রয়োজন বোধ করি।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সাধারণ নাগরিকের মধ্যে বড় প্রশ্ন রয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অধিকতর কর্মসংস্থান, রাজস্ব বৃদ্ধি ও রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ও প্রশাসনের হয়রানি নিয়ে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের গতিপ্রকৃতি গত ১৬ বছর ধরে যেভাবে ধরে রেখেছেন তা বিশ্বের বিস্ময়। বর্তমানে তার এ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার প্রধান প্রতিবন্ধক হচ্ছে দুর্নীতি। এই দুর্নীতির কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এই দুর্নীতির কারণে প্রকল্পগুলো যথা সময়ে শেষ হয় না। ফলে খরচ বাড়ে, জনগণের হয়রানি বাড়ে। আমলাদের একটি অংশ দুর্নীতি পরায়ণ হয়ে উঠেছেন এবং তাতে জনগণের হয়রানি বাড়ছে।

এ কে মোমেন বলেন, এই অল্প সংখ্যক দুর্নীতিপরায়ণ আমলাদের জন্য সারা আমলাতন্ত্র বদনামের ভাগীদার হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। এই বাজেটে দুর্নীতি ও বিদেশে টাকা পাচার বন্ধের নির্দেশনা ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ জনগণের আস্থা অর্জনে সহায়ক হবে। সরকারি কর্মচারীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বার্ষিক হিসাব বাধ্যতামূলক করা এখন সময়ের দাবি। কিছু সংখ্যক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারণে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এসব ব্যাপারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করলে দুর্নীতি কমবে।

সাবেক এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে, মাঠে ময়দানে সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক। সাধারণ নাগরিক এখন অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে। তাই তারা সবাই জাতির আস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছেন।

Nagad
Nagad

আব্দুল মোমেন বলেন, সাধারণ নাগরিকের মধ্যে বড় প্রশ্ন রয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে। অধিকতর কর্মসংস্থান, রাজস্ব বৃদ্ধি ও রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ও প্রশাসনের হয়রানি নিয়ে জনগণের নানা প্রশ্ন রয়েছে। তিনি বলেন, দেশে যথেষ্ট কর্মসংস্থান না থাকায় প্রতিবছর হাজার হাজার কর্মক্ষম লোক বৈধ ও অবৈধ পথে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে। কর্মসংস্থান বা উদ্যোক্তা সৃষ্টি সাধারণত প্রাইভেট সেক্টর করে থাকে। সেজন্য তাদের যথেষ্ট ব্যাংক ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত। এবারের বাজেটে ঘাটতি মেটানোর জন্য ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিচ্ছে। এর অর্থ হচ্ছে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা ঋণ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।

মোমেন বলেন, ইতোমধ্যে অনেক ব্যাংকের বেহাল অবস্থা। বাজেটে এর প্রতিকারের কথা থাকলে জনমনে আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হতো। বরং, কালো টাকাকে শতকরা ১৫ টাকা কর দিয়ে সাদা করার ঘোষণায় যারা সৎ করদাতা তারা হতাশ হয়েছেন। কালো টাকা সাদা করার সুযোগের পরিমার্জন প্রয়োজন বোধ করি।

সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বার্থে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলা অর্জনে, সাদাকে সাদা, কালকে কালো না বললে শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি অবিচার করা হয়। অর্থমন্ত্রী বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে যা যা করা প্রয়োজন তা করবেন বলে বিশ্বাস করি।