Print

সারাদিন

রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

প্রকাশিত: ৫:০০ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২৪

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি:

মোংলায় নানা আয়োজনে “ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো” গানের স্রষ্টা, তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মsদ শহিদুল্লাহ’র ৩৩তম মৃত্যবার্ষিকী পালিত হয়েছে। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ অক্টোবর বরিশাল রেডক্রস হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মারা যান কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। এ বছর তিনি একুশে পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত হন। শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাঁকে দিয়েছে সত্তরের অন্যতম কবি-স্বীকৃতি।

এ উপলক্ষে শুক্রবার (২১ জুন) সকালে রুদ্র স্মৃতি সংসদের আয়োজনে একটি শোক র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি কবির গ্রামের বাড়ি উপজেলার মিঠাখালী বাজার প্রদক্ষিণ করে তার কবরস্থানে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে কবির কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন রুদ্র স্মৃতি সংসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

এ সময় কবির কবরের পাশে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনসহ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া মসজিদে কোরআন খতম ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সন্ধ্যায় মোংলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও রুদ্রের গড়া সংগঠন অন্তর বাজাও এর শিল্পীরা রুদ্রের গানের আয়োজন করেছে।

কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর স্মরণ সভায় রুদ্র স্মৃতি সংসদের রুদ্রের অনুজ সুমেল সারাফাতের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল, মোংলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মোংলা শাখার সভাপতি নূর আলম শেখ, রুদ্র স্মৃতি সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। স্মরণসভা শেষে রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশিত হয়।

উল্লেখ্য, ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি তিনি উচ্চারণ করেছেন অবিনাশী স্বপ্ন ‘দিন আসবেই দিন সমতার’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান কবিকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের প্রতি মগ্নতা।

মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দুইবার ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন দ্রোহের এ কবি।

Nagad
Nagad

বিগত স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনে রুদ্র সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের আজকের এই দিনে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।