প্রকাশিত: ৬:৩০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এমপি বলছেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে আটক ৬ ছাত্র নেতা মোঃ নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মোঃ আবু বাকের, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুমকে মুক্তি দিতে হবে।
সোমবার (২৯জুলাই) এক বিবৃতিতে গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র, এখানে দেশের মালিক জনগণ। দেশের সকল ক্ষমতার মালিকও জনগণ। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বা প্রতিবাদ করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। অহিংস প্রতিবাদকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে বিবেচনা করার বা সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রাষ্ট্রীয় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ব্যবহার করে সংহিসভাবে মোকাবেলা করার অধিকার সরকার বা সরকারি দলের নেই। তিনি বলেন, সে কারনণ শুধু ছাত্র নয়… কোন আন্দোলন দমাতেই আইন-শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য গুলি করতে পারে না।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে বেশ কয়েকদিন ধরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের পরিবার ও স্বজনদের সাথে দেখা পর্যন্ত করতে দেয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি এজন্য স্বজনদের মাঝে মারাত্মক উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। আবার, ডিবি হেফাজতে থেকেই আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে তারা। এদিকে, সাধারণ ছাত্ররা মনে করছে, গোয়েন্দা সংস্থা বলপূর্বক এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের বাধ্য করছে। এ কারণে সাধারণ ছাত্ররা আটক সমন্বয়কদের সেই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছে। দিনের পর দিন সাধারণ ছাত্রদের নিরাপত্তার নামে তাদের ও তাদের পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখাকে আমরা আইন সম্মত মনে করি না।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বৃষ্টির মত গুলি ছুড়েছে। হেলিকপ্টার এবং বহুতল বিশিষ্ট বাড়ির ছাদের ওপর থেকে এবং ভ্রাম্যমান গাড়ি থেকে জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। যে কারণে, বাবা-মায়ের কোলের মধ্যে ও ঘরের মাঝে খেলারত অবস্থায় শিশু নিহত হয়েছে। আবার, ঘরের ভেতরে কাজ করতে করতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গৃহিনী নিহত হয়েছেন বলেও গণমাধ্যমে এসেছে। একইভাবে অসংখ্য নিরিহ পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। প্রশ্ন হলো, এই ধরনের গুলি বর্ষনের উদ্দেশ্য কী ছিলো? সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে এই ধরণের প্রক্রিয়ায় কি সন্ত্রাসী চিহ্নিত করা সম্ভব ছিলো? বাবার কোলে শিশু, রান্নাঘরে গৃহিনী ও নিরিহ পথচারী তারা কী সন্ত্রাসী? এই মৃত্যুর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।
বিবৃতিতে বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, আন্দোলন দমাতে দেদারছে গ্রেফতার করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, গ্রেফতার বাণিজ্য চালাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। সাধারণ মানুষের মাঝে গ্রেফতার আতংক বিরাজ করছে। দেশের মানুষ যেনো আতংকের রাজ্যের বাসিন্দা। প্রতিটি আহত, নিহত এবং সহিংসতার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে আমরা বিচার চাচ্ছি।