প্রকাশিত: ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১২, ২০২৫
সারাদিন ডেস্ক
আওয়ামী লীগের করা জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) আইন পর্যালোচনার জন্য বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রোববার (১২ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় নির্বাচন ভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে এনআইডি কার্যক্রম সম্পর্কিত নানা বিষয়ের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আইন পর্যালোচনার বিষয়েও আলোচনা হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকার একটি আইন প্রণয়ন করে এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে ন্যস্ত করার ব্যবস্থা নেয়। ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩’ অনুযায়ী, সুরক্ষা সেবা বিভাগে এনআইডি কার্যক্রম নেওয়া সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত এটি নির্বাচন কমিশনের অধীনেই থাকবে।
তবে সুশীল সমাজ, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা এবং সাধারণ মানুষ শুরু থেকেই এই কার্যক্রম ইসির অধীনে রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের মতে, এনআইডি সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্ত করা হলে তা ভবিষ্যতে জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “ইসি থেকে সরকার কেন এনআইডি নিতে চায়, তা পরিষ্কার নয়। কিন্তু সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্ত করা হলে ভবিষ্যতে ভোটার তালিকা ও এনআইডি তথ্য নিয়ে জটিলতা তৈরি হতে পারে।”
এনআইডি প্রকল্পের কয়েক হাজার কর্মী ইতোমধ্যেই এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। তাদের মতে, এনআইডি কার্যক্রমে দীর্ঘদিন ধরে দক্ষতা অর্জন করা লোকবলকে সরিয়ে নতুন করে কর্মী তৈরি করতে সরকারের বিপুল অর্থ ও সময়ের অপচয় হবে। এতে নাগরিক সেবায় ভোগান্তি ও তথ্যের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়বে।
রোববারের বৈঠকে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। এর মধ্যে রয়েছে: বিশেষ এলাকায় (চট্টগ্রাম অঞ্চল) ভোটার নিবন্ধনের জন্য বিশেষ তথ্য ফরম ব্যবহার। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনবল কাঠামো ও সরঞ্জামাদি সংযোজন।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পর এএমএস নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশনের এটি দ্বিতীয় বৈঠক। বৈঠকে প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হবে।
নির্বাচন কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামত এবং সমাধানের ওপর নির্ভর করবে এনআইডি সেবা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ইস্যুতে সমন্বিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ জরুরি, যা নাগরিক সেবার মান বজায় রাখার পাশাপাশি রাজনৈতিক বিতর্ক এড়াতে সহায়ক হবে।