প্রকাশিত: ৩:৩৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, ১৯৭১ সালে যারা সরাসরি রণাঙ্গনে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করেছেন, শুধুমাত্র তারা ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন। অন্যদিকে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন, কূটনৈতিক তৎপরতা ও অন্যান্য সহযোগিতাকারীদের ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে স্বীকৃতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, বর্তমান আইনে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া আট ধরনের ব্যক্তি ও পেশাজীবীদের মধ্যে কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ জন্য ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০২২’ সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হচ্ছে।
ফারুক-ই-আজম বলেন, ইতোমধ্যে ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে এবং অংশীজনদের মতামত নেওয়া হয়েছে। খসড়াটি আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
এছাড়া, সনদধারী অমুক্তিযোদ্ধাদের অপসারণের দাবিও উঠেছে। এ বিষয়ে নতুন আইন আনার প্রক্রিয়া চলছে, যার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় বড় ধরনের সংশোধন আসবে।
নতুন আইনের মূল দিকসমূহ:
১. রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা: ১৯৭১ সালে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীরা কেবল ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।
২. মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী: যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন, কূটনৈতিক সহায়তা, মুজিবনগর সরকারের কর্মকর্তা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী বা চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করেছেন, তারা ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।
৩. বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা পর্যালোচনা: যারা নতুন সংজ্ঞার আওতায় পড়বেন না, তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে।
৪. বয়সসংক্রান্ত নীতি: মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বনিম্ন বয়স ১২ বছর ৬ মাস নির্ধারণ করা হয়েছে।
৫. ভুল তথ্য প্রদানকারীদের সুযোগ: যারা ভুল তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সুবিধা নিয়েছেন, তাদের ২৬ মার্চের মধ্যে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হতে পারে।
এদিকে, বর্তমান আইনে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণায় সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সব ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। তবে নতুন খসড়ায় এই অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে।