প্রকাশিত: ৬:২৬ অপরাহ্ণ, মে ১, ২০২৫
সারাদিন ডেস্ক
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের রাখাইনের জন্য মানবিক করিডোর দেওয়ার প্রস্তাব প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসা উচিত একটি নির্বাচিত সংসদ থেকে।
বৃহস্পতিবার ঢাকার নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের আয়োজিত মহান মে দিবসের সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘বিদেশি স্বার্থ নয়, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভারত, পাকিস্তান কিংবা মিয়ানমার নয়, সবার আগে বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, ১৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে প্রায় আট কোটি মানুষ শ্রমজীবী। উন্নয়ন ও অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি এই মেহনতি মানুষ। অথচ তাদের ন্যায্য অধিকার আজও নিশ্চিত হয়নি। ফ্যাসিবাদী শাসন পতনের পরও জনগণের রাজনৈতিক অধিকার এখনো পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
তারেক রহমান দাবি করেন, বিএনপি বারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকেও কাউকে বিদেশে পালিয়ে যেতে হয়নি। কারণ, দলটি জনগণের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে।
তিনি আরও বলেন, শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন খাতে শ্রমিকরা এখনো নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিন পার করছেন। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি থাকলেও মানুষের আয় বাড়ছে না।
সংস্কারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে সংস্কার নিয়ে শোরগোল চলছে। কিন্তু সেখানে শ্রমজীবী মানুষের কণ্ঠস্বর অনুপস্থিত। তাই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন ছাড়া জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
তারেক রহমান অভিযোগ করেন, সরকার সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাইছে। এটা সঠিক পথ নয়। বরং প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত।
দুপুর ২টার দিকে নয়াপল্টনের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরু হয়। রাজধানী ও আশপাশের জেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমবেত হন শ্রমিকরা। এতে নয়াপল্টন এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল পর্যন্ত স্লোগান ও বর্ণাঢ্য সাজে মিছিলকারীদের অবস্থান জনসমুদ্রে রূপ নেয়। তাদের মুখে ছিল—‘দুনিয়া মজদুর এক হও, লড়াই করো’ এবং ‘অবিলম্বে সংসদ নির্বাচন চাই’ স্লোগান।
এর আগে, বুধবার শ্রমিকদলের ১২ দফা দাবি তুলে ধরেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—অবিলম্বে নির্বাচন, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচার, শ্রমিকদের ডে-কেয়ার, বন্ধ শিল্প চালু ও নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠা, আউটসোর্সিং বন্ধ, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার, শ্রমিক হত্যার বিচার, মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা, বৈষম্যহীন পে-স্কেল এবং নিত্যপণ্যের দাম কমানো।
সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।