প্রকাশিত: ৪:০৩ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটির সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাজধানীর কাকরাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে তিনি এ ঘোষণা দেন।
অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন বলেন, আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায্য দাবির পক্ষে কথা বলতে এসেছি। আমাদের ওপর যেভাবে পুলিশ হামলা চালিয়েছে, তা সম্পূর্ণ অন্যায়। আমরা কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে আসিনি, বরং আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য এসেছি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সরিয়ে দিতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হলে তার ফল ভালো হবে না। আমার চোখের সামনে আমার কোনো শিক্ষার্থীকে কেউ আঘাত করতে পারবে না।”
এ সময় শিক্ষার্থীরা “আবাসন চাই, বঞ্চনা নয়”, ‘বাজেট কাটছাঁট চলবে না’, ‘হামলার বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে শিক্ষার্থীরা কাকরাইলে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। অনেকেই ক্লান্ত হলেও আন্দোলন থেকে সরে যাননি। কেউ কেউ রাতভর রাস্তায় থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো—
১. ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু করা,
২. প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেটে কোনো কাটছাঁট না করে অনুমোদন দেওয়া,
৩. দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাস ও দ্রুত বাস্তবায়ন,
৪. ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
এর আগে, বুধবার (১৫ মে) বেলা ১১টায় তিন দফা দাবিতে উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র উদ্দেশ্যে লংমার্চ শুরু করেন জবি শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি গুলিস্তান হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে পৌঁছালে পুলিশ টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। লাঠিচার্জেও অনেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাংবাদিক আহত হন।
পরে রাতে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। তবে তার বক্তব্যে অসন্তুষ্ট শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানায়। একপর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে বোতল নিক্ষেপ করা হলে তিনি স্থান ত্যাগ করেন।
শিক্ষার্থীরা জানায়, উপদেষ্টার বক্তব্যে আশ্বস্ত না হয়ে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং কাকরাইল মসজিদের সামনেই অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।