প্রকাশিত: ৬:০৮ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকারি দুই উপদেষ্টার একজনের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) এবং অপর উপদেষ্টার একজন বর্তমান ও একজন সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকে (পিও) দুর্নীতির অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক সাবেক নেতাকেও তলব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
তিনি বলেন, ছাত্র প্রতিনিধি তুহিন ফারাবি ও মাহমুদুল হাসানকে ২০ মে, গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরকে ২১ মে এবং মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে ২২ মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।
এর আগে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার এপিএস মো. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের পিও তুহিন ফারাবিকে দুর্নীতির অভিযোগে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত ২৭ এপ্রিল এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা জানিয়েছিল দুদক।
এছাড়া এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরকে পাঠ্যবই ছাপানোর কাগজ কেনা সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে ২১ এপ্রিল সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়।
দুদক মহাপরিচালক জানান, তুহিন ফারাবির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, তদবির বাণিজ্য, চাঁদাবাজিসহ নানান অনিয়মের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথি বিভিন্ন দপ্তর থেকে চাওয়া হয়েছে। একইভাবে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অনুসন্ধান চলছে।
এনসিপি নেতা গাজী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্য, তদবির বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে তার সংক্রান্ত রেকর্ড সংগ্রহে কাজ চলছে।
দুদকের এ অনুসন্ধানের অগ্রগতি জানতে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে দুদক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। পরে সংগঠনের দুই নেতা দুদক কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদন দেন।
সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম বলেন, “দুদক অনুসন্ধান শুরু করলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। আমরা আশঙ্কা করছি, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে তদন্ত আড়াল করার চেষ্টা হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “এপিএস ও পিওদের দুর্নীতির দায় সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারাও এড়াতে পারেন না। এসব দুর্নীতির পেছনে তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। অথচ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেনি।”
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা, সচিব ও কর্মকর্তাদের প্রতি মাসে সম্পদের হিসাব দেওয়ার কথা থাকলেও তার কোনো অগ্রগতি নেই বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে দুদক মহাপরিচালক বলেন, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে দুদক আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বলপ্রয়োগ বা চাপ প্রয়োগ করে দুদককে প্রভাবিত করতে পারবে না।”