প্রকাশিত: ২:৩৯ অপরাহ্ণ, মে ১৭, ২০২৫
তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:
ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে জনগণের জন্য আরও ব্যবহারবান্ধব করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে আইআইজি ও এনটিটিএন পর্যায়ে মূল্য হ্রাস করা হয়েছে এবং আগামী দুই-এক মাসের মধ্যেই গ্রাহকরা এর সুফল পাবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
শনিবার (১৭ মে) রাজধানীর বিটিআরসি ভবনে ‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেটের দাম আরও কমিয়ে জনগণের ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে। শিক্ষায় আমরা অনেকটা এগিয়েছি, কিন্তু কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে এখনও অনেক পিছিয়ে। এসব খাতে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে হবে।’
বন্যা ও ঝড়ের সময় মোবাইল ইন্টারনেট ব্যাহত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ আমাদের নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও, সেই সময়ে কীভাবে টেলিযোগাযোগ সেবা সচল রাখা যায়, তা ভাবতে হবে।’
জুলাই অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, ‘ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট করে গণহত্যা চালানো হয়েছিল। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে কিছুই জানতে পারিনি। পরে ইন্টারনেট ফিরে আসায় সব জানতে পেরেছি। এ কারণেই আমরা ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’ তৈরি করেছি—যা এই সরকারের একটি বড় অর্জন।’
তরুণদের প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবনে সম্পৃক্ত করতে বেশি সুযোগ দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনেক উদ্ভাবক সুযোগের অভাবে দেশ ছাড়ছেন। প্রতিদিনই নতুন নতুন উদ্ভাবনের খবর আসে, কিন্তু আমাদের অংশগ্রহণ সীমিত। থ্রিজি, ফোরজি বা ফাইভজি—সবক্ষেত্রেই আমাদের আরও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’
নারীদের জন্য সাইবারস্পেস আরও নিরাপদ করতে সাইবার সুরক্ষা আইন কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ‘আমরা স্বীকার করি, নারীদের ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখনও সফল হতে পারিনি,’—বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান,‘নারীদের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিতে সরকার কাজ করছে। আইনটি পাস হলে সাইবারস্পেসে নারীরা নিরাপদ থাকবেন। তিনি বলেন, ন্যাশনাল ইনোভেশন চ্যালেঞ্জে নারী উদ্যোক্তা ও কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হবো। সবুজ পাতা নামের যে উদ্যোগ সেখানেও নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ‘ডিজিটাল রূপান্তরে নারী-পুরুষ সমতা’ প্রতিপাদ্যে এবার দেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিনব্যাপী আয়োজনে রয়েছে সেমিনার, হ্যাকাথন, ডাক টিকিট উন্মোচন ও বিটিআরসি প্রাঙ্গণে মেলা।
এ উপলক্ষে বিটিআরসি ইতোমধ্যে ই-লাইসেন্সিং সেবা চালু করেছে। অনুষ্ঠানে একটি ন্যাশনওয়াইড আইএসপি এবং একটি ডিভিশনাল আইএসপির হাতে ই-লাইসেন্স হস্তান্তর করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মাহবুবা ফারজানা, বিটিআরসি চেয়ারম্যান (অব.) মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী, আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব জহিরুল ইসলাম।