প্রকাশিত: ২:৫৫ অপরাহ্ণ, মে ১৯, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের আমলাতন্ত্র আরও শক্তিশালী হচ্ছে উল্লেখ করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও শ্বেতপত্র কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশে চোরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল—যেখানে রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ীরা সক্রিয় ছিলেন। এখন রাজনীতিবিদরা পালিয়েছেন, ব্যবসায়ীরা ম্রিয়মাণ, আর আমলারা পুরো শক্তি নিয়ে পুনরুজ্জীবিত হয়েছে।’
সোমবার (১৯ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৫-২৬: নীতি সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক বহুপাক্ষিক অংশীজনের বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে সিপিডি ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘গত ১৫ বছরের অর্থনৈতিক চিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়—বেকারত্ব বেড়েছে ১৪ শতাংশে, শ্রমিকের মজুরি মূল্যস্ফীতির তুলনায় অনেক নিচে। অর্থনীতি এখনও ঘুরে দাঁড়ায়নি। সরকার বিনিয়োগকে উৎসাহ দিতে পারছে না। ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ভোগতাড়িত, বিনিয়োগতাড়িত নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুই ভাগ করা উচিত ছিল, যা আমাদের শ্বেতপত্রে সুপারিশ করা হয়েছিল। তবে যেভাবে করা হয়েছে, তা ঠিক হয়নি। আলোচনাবিহীন সিদ্ধান্ত, পেশাদারদের অংশগ্রহণ সংকোচন এবং অতিরিক্ত প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ গ্রহণযোগ্য নয়।’
চরম দারিদ্র্য ও যুব দারিদ্র্য বাড়ছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘বাস্কেট কেস ধরনের নেতিবাচক ধারণা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। আমাদের সক্ষমতার ওপর আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম আবু ইউসুফ বলেন, ‘এবার বাজেট হবে ভিন্নধর্মী। অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত টাস্কফোর্স, কমিশন ও শ্বেতপত্র কমিটির প্রস্তাবের প্রতিফলন বাজেটে থাকা উচিত। বাজেটের আকার ও প্রকল্প সংখ্যা কমানো হয়েছে, যা ইতিবাচক ইঙ্গিত।’
তিনি বলেন, ‘কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে হবে। ২০৩৫ সাল পর্যন্ত ১০.৫ শতাংশের লক্ষ্য অত্যন্ত কম; এটি হওয়া উচিত ১৪-১৫ শতাংশ। কর অব্যাহতি যৌক্তিক করতে হবে এবং কার্যকর টিআইএনধারীর সংখ্যা নিশ্চিত করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।