Print

সারাদিন

হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করল ট্রাম্প প্রশাসন

প্রকাশিত: ৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ, মে ২৩, ২০২৫

সারাদিন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। এতে মার্কিন সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়টির দ্বন্দ্ব আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। খবর বিবিসির।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (পূর্বে টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে জানান, “হার্ভার্ড আইন মানেনি, তাই তাদের ‘স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রামের’ সনদ বাতিল করা হয়েছে।” একইসঙ্গে তিনি দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এই ঘটনাকে সতর্কবার্তা হিসেবে গ্রহণ করার আহ্বান জানান।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এই সিদ্ধান্তকে “অবৈধ” উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আমরা বিদেশি শিক্ষার্থী ও গবেষকদের স্বাগত জানাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যারা ১৪০টিরও বেশি দেশ থেকে এসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতিকে সমৃদ্ধ করেছে। এই প্রতিহিংসামূলক সিদ্ধান্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দেশের জন্যই ক্ষতিকর।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ তথ্যমতে, গত একাডেমিক বছরে হার্ভার্ডে ৬ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী পড়েছেন, যা মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ২৭ শতাংশ।

এই সিদ্ধান্তের ফলে বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসজুড়ে উদ্বেগ ও হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। অস্ট্রেলিয়ান শিক্ষার্থী সারাহ ডেভিস বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা যখন গ্র্যাজুয়েশন করতে যাচ্ছি, ঠিক পাঁচ দিন আগে এই ঘোষণা এলো। এখন আমাদের অনেকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’

সুইডেনের শিক্ষার্থী লিও গার্ডেন বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন যেন হার্ভার্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বে বিদেশি শিক্ষার্থীদের তাসের পাতার মতো ব্যবহার করছে। এটি অত্যন্ত অমানবিক।’

Nagad
Nagad

এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে এবং কিছু প্রতিষ্ঠান সরকারের চাপের মুখে সমঝোতায় যায়। তবে হার্ভার্ড এপ্রিল মাসে এসব চাপের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়। যদিও হোয়াইট হাউস পরে দাবি করে, তাদের পাঠানো চিঠিটি “ভুলবশত” পাঠানো হয়েছিল।

সরকার হার্ভার্ডকে তার নিয়োগ, ভর্তি ও পাঠদানের নীতিমালা সংস্কারের নির্দেশ দেয়, যাতে ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবিলা করা যায় বলে দাবি করা হয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের করছাড় সুবিধা ও সরকারি অনুদান বন্ধের হুমকিও দেওয়া হয়।

সবশেষে, বৃহস্পতিবার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কর্তৃপক্ষ হার্ভার্ডকে নির্দেশ দেয়, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গত পাঁচ বছরে বিদেশি শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত রেকর্ড, ভিডিও ফুটেজ এবং কথিত অবৈধ বা সহিংস কর্মকাণ্ডের তথ্য জমা দিতে হবে।

এদিকে একইদিনে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ফেডারেল আদালত বিদেশি শিক্ষার্থীদের আইনি মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ জারি করে, যা কিছুটা স্বস্তি এনে দেয় শিক্ষার্থীদের।

সুইডিশ শিক্ষার্থী গার্ডেন বলেন, “আমরা এখানে এসেছি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, একাডেমিক স্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তার পরিবেশে পড়াশোনা করতে। অথচ এখন এই মূল্যবোধগুলোই হুমকির মুখে পড়েছে। বিদেশি শিক্ষার্থী ছাড়া হার্ভার্ড, হার্ভার্ড থাকে না।”