Print

সারাদিন

ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়ায় হতাশ টিউলিপ সিদ্দিক

প্রকাশিত: ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৩, ২০২৫

সারাদিন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে সফররত প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর সঙ্গে সাক্ষাতের অনুরোধ করেছিলেন। তবে ড. ইউনূস সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন টিউলিপ।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস নিশ্চিত করেন, তিনি টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন না। তার ভাষ্য, “না, করব না, কারণ এটা আইনি প্রক্রিয়া। আমি কোনোভাবে সে প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে চাই না।”

ড. ইউনূস বলেন, “টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এখন আদালতের বিষয়। আদালতই সিদ্ধান্ত নেবে মামলাটি চলার মতো যথেষ্ট উপাদান আছে কি না।” তিনি জানান, এই বিষয়ে তিনি বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ওপর পূর্ণ আস্থা রাখেন।

সাক্ষাৎকারে যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, টিউলিপের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে যুক্তরাজ্য থেকে তার প্রত্যর্পণ চাওয়া হবে কি না, জবাবে ড. ইউনূস বলেন, “যদি এটি আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হয়, তবে অবশ্যই।”

টিউলিপের প্রতিক্রিয়া
এই প্রত্যাখ্যানে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এক বিবৃতিতে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, “মিডিয়ার সামনে কোনো প্রমাণ ছাড়া কাল্পনিক অভিযোগের ভিত্তিতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছড়ানো হচ্ছে। ইউনূস নিজেই সে প্রতিহিংসার কেন্দ্রে রয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “যদি এটি সত্যিকার আইনি প্রক্রিয়া হতো, তবে তারা আমার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করত, ঢাকায় এমন এক ঠিকানায় ভুয়া চিঠিপত্র পাঠাত না, যেখানে আমি কখনও থাকিনি।”

Nagad
Nagad

“আমি একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং যুক্তরাজ্যের সংসদের একজন গর্বিত সদস্য। ইউনূসকে অনুরোধ করব সংবাদমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়ার অভ্যাস বন্ধ করুন এবং আদালতে প্রমাণের সুযোগ দিন।”

পূর্ববর্তী তদন্ত ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট
চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর নৈতিক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত পরিচালনা করেন। সেই প্রতিবেদনে ‘কোনো অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়নি’ বলা হলেও আত্মীয়তার সম্পর্কের কারণে সম্ভাব্য সুনামের ক্ষতির ঝুঁকির কথা বলা হয়।

বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের দাবি, শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে, যার একটি বড় অংশ যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছে। এই অভিযোগ তদন্তে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ব্রিটিশ আইনজীবী নিয়োগ করেছে।

ড. ইউনূস জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্য সরকার এই প্রচেষ্টায় সহায়তা করছে এবং আন্তর্জাতিক দুর্নীতি সমন্বয় কেন্দ্র (ISCCC) সম্ভাব্য সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।

স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি
এ সফরে ড. ইউনূসের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার-এর সঙ্গে কোনো বৈঠক হয়নি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. ইউনূস বলেন, “আমি জানি না আমি হতাশ, না তিনি হতাশ। এটা এক ধরনের সুযোগ হারানো। বাংলাদেশে এলেই হয়তো পরিস্থিতিটা আরও স্পষ্ট হতো।”

তবে ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।