প্রকাশিত: ১২:০৭ অপরাহ্ণ, জুন ১৩, ২০২৫
সারাদিন ডেস্ক
ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলের সামরিক হামলায় শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের নিহত হওয়ার পর ইসরায়েলকে “বেদনাদায়ক শাস্তি” দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসলামিক বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সায়্যেদ আলী খামেনি।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইসরায়েলি হামলার পর দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “এই অপরাধের জন্য জায়োনিস্ট শাসনব্যবস্থা কঠোর শাস্তি পাবে। তাদের শয়তানি প্রকৃতি আরও একবার উন্মোচিত হয়েছে।”
প্রাণ গেল শীর্ষ কমান্ডার ও বিজ্ঞানীদের
তেহরানের আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চালানো হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল হোসেইন বাকেরি, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি, খাতামু আল-আম্বিয়া সেন্ট্রাল হেডকোয়ার্টারের কমান্ডার মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ, এবং দুই শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচি ও ড. ফেরিদুন আব্বাসি।
খামেনির কড়া প্রতিক্রিয়া
আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, “ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনী জায়োনিস্ট শাসনব্যবস্থাকে ছাড় দেবে না। শহীদদের সহকর্মীরা অবিলম্বে দায়িত্ব পালন শুরু করবে এবং প্রতিশোধ নেওয়া হবে।”
তিনি ইঙ্গিত দেন, ইসরায়েল “তিক্ত ও যন্ত্রণাদায়ক পরিণতি”র মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ
এই হামলার পর আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন অধ্যায় শুরু হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকে বলছেন, সামরিক লক্ষ্য ছাড়াও আবাসিক ভবনে হামলা চালিয়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।
পশ্চিমা বিশ্বে এ নিয়ে নৈতিক ও আইনগত বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইরান এটিকে “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও অঞ্চলীয় স্থিতিশীলতার ওপর সরাসরি আঘাত” হিসেবে চিহ্নিত করছে।
প্রতিরোধ ও সম্ভাব্য পাল্টা জবাব
ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই হামলার জবাবে “যথাযথ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা” নেওয়া হবে। খামেনিও সশস্ত্র বাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, ইরান শুধু সামরিকভাবে নয়, কূটনৈতিকভাবেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের অবস্থান আরও জোরদার করবে।
যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু আলোচনা ঘিরে উত্তেজনা
বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, চলমান যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু চুক্তি আলোচনা চলাকালীন এ ধরনের হামলা চালিয়ে ইসরায়েল একটি বড় জুয়া খেলেছে। তাদের ধারণা, এমন উত্তেজনার পরিণতিতে যুক্তরাষ্ট্র একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে ইসরায়েলের পাশে দাঁড়াতে পারে।