প্রকাশিত: ২:৩২ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তারা। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংকল্পবদ্ধ যে, আমরা জুলাই মাসের মধ্যেই জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারবো।’
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের মূল আলোচনা শুরু হয়। সেখানে আলোচনার শুরুতেই আলী রীয়াজ এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘হয়তো সব বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হবে না। কিন্তু সবাইকেই ছাড় দেওয়ার মনোভাব নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।’
এর আগে ঈদের আগেই দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রস্তুতিমূলক আলোচনা অনুষ্ঠিত হলেও আজ থেকে মূল আলোচনা শুরু হয়েছে। এতে বিএনপি, এনসিপিসহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
ঐকমত্য কমিশনের প্রধান জানান, এখন থেকে টানা তিন দিন আলোচনা চলবে। এরপরেও আলোচনা অব্যাহত থাকবে। রাজনৈতিক দলগুলো রাজি থাকলে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনিবারেও আলোচনা করতে রাজি কমিশন।
বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদ, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, এবি পার্টির আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, এনসিপির তাসনিম জারা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, বিএলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশ জাসদের মোস্তাক হোসেনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের নেতারা। বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি।
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন। বৈঠক রয়েছেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।
ঈদুল আজহার আগে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু হয়। মঙ্গলবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মূল আলোচনা শুরু করেছে কমিশন। এই আলোচনায় সংবিধানের ৭০নং অনুচ্ছেদ, সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব, স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ এবং প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
গত অক্টোবরে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিনের প্রতিবেদন জমা পড়ে ফেব্রুয়ারি মাসে। এসব প্রতিবেদনের সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তারা সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত জানতে চায়- যাদের মধ্যে ৩৩টি মতামত জানায়। এরপর ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত তাদের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনের মাধ্যমে প্রথম পর্বের সংলাপ সম্পন্ন করে ঐকমত্য কমিশন।