Print

সারাদিন

এনবিআর সংস্কার না হলে রাজস্ব ঘাটতি কাটবে না: সিপিডি

প্রকাশিত: ৬:৫১ অপরাহ্ণ, জুন ২২, ২০২৫

সারাদিন ডেস্ক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) কাঠামোগত সংস্কার না হওয়ায় রাজস্ব ঘাটতি থেকে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। তারা বলছে, এনবিআরের ভিতরকার দুর্বল কাঠামো ও সংস্কারহীন ব্যবস্থাপনার কারণে রাজস্ব ঘাটতি এখন নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রোববার (২২ জুন) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সিপিডি আয়োজিত এক ডায়ালগে নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘এনবিআরে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার হয়নি। কেবল কাঠামো রেখে দিলে এমন ঘাটতি চলতেই থাকবে। এই কাঠামো দিয়ে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় সম্ভব নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে অর্থনীতির মূল সূচকগুলো নিম্নমুখী। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা—সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকিপূর্ণ। এমন পরিস্থিতিতে প্রস্তাবিত বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে, যা বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ রয়েছে।’

ডায়ালগে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ, বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইনামুল হক খান, ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা এবং শ্রমিক নেতা রাজেকুজ্জামান রতন।

মূল প্রবন্ধে ড. ফাহমিদা খাতুন জানান, জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ২০২৬ সালে সাড়ে ৫ শতাংশ ধরা হলেও, বাস্তবে এটি অর্জন কঠিন হবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এই প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৪ শতাংশ। তিনি বলেন, ‘প্রবৃদ্ধি অর্জনে বড় ধরনের বিনিয়োগ প্রয়োজন। অথচ বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে স্থবিরতা বিরাজ করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মে মাসে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ শতাংশের ওপরে, অথচ আগামী অর্থবছরে তা ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।’

Nagad
Nagad

ডায়ালগে সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের রাজস্বের দুই-তৃতীয়াংশ আসে পরোক্ষ কর থেকে, যা বৈষম্যমূলক। বাজেটের মূল দর্শন হওয়া উচিত—পুনর্বণ্টন। যারা বেশি আয় করে তাদের কাছ থেকে বেশি কর আদায় করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় করা উচিত।’

অতীতে জনগণের সঙ্গে বাজেট নিয়ে আলোচনার পর্যাপ্ত সময় না পাওয়ারও সমালোচনা করা হয় এই ডায়ালগে। বক্তারা মনে করেন, বাজেট চূড়ান্ত হওয়ার আগে জনমতের প্রতিফলন দরকার ছিল, যা এ বছর হয়নি।