প্রকাশিত: ৪:১৯ অপরাহ্ণ, জুন ২৬, ২০২৫
সারাদিন ডেস্ক
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘ক্ষমতার লোভ ভয়ানক জিনিস। বাংলাদেশের কোনো নির্বাচনই বিতর্কমুক্ত ছিল না। এমনকি ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও কারচুপির অভিযোগ রয়েছে, যেখানে বঙ্গবন্ধুর মতো নেতাও তা থেকে বিরত থাকতে পারেননি।’
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এক মামলার রিমান্ড শুনানিতে অংশ নিতে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে আদালতে হাজির করা হয় হাবিবুল আউয়ালকে। শুনানি শেষে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতে নিজের বক্তব্যে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি—ডামি নির্বাচন করেছি। রাজনৈতিক সমঝোতার অভাবে নির্বাচন একতরফা হয়েছে। তবে আমি কোনো আর্থিক দুর্নীতি করিনি, আমার জীবনে কখনও পয়সা খাইনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাতের ভোট নিয়ে বলব, যখন এগুলো হয়েছে, আমি গভীর নিদ্রায় ছিলাম।’
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেন—আপনাকে বিজয়ী করে দেবো, আপনি শুধু টাকা দেন, আমি পকেটে ঢুকিয়ে নেবো।’
তিনি আরও দাবি করেন, ‘নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ভাতা হিসেবে কয়েক লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও এসব টাকার কোনো হিসাব দেননি হাবিবুল আউয়াল। এসব অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।’ শুনানির একপর্যায়ে বিচারক বলেন, ‘জাতি আপনার কাছ থেকে নিরপেক্ষতার প্রত্যাশা করেছিল। কিন্তু আপনি বিতর্কিত নির্বাচন উপহার দিয়েছেন।’
আসামির দীর্ঘ বক্তব্যে বিরক্ত হয়ে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, ‘এখানে সাধু সাজার সুযোগ নেই, আপনি কী করেছেন সেটাই বলুন।’ আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘৭০ বছর বয়সী এই মানুষটি ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধে কাজ করতে গিয়ে যেন নিজের জীবনের সম্মান হারাচ্ছেন। আমরা চাই না ফ্যাসিস্ট বিরোধিতা করতে গিয়ে আমরা নিজেরাই ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠি।’
পরে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২২ জুন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সালাউদ্দিন খান বাদী হয়ে ঢাকার একটি আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। শেখ হাসিনাসহ মোট ২৪ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে আছেন সাবেক ১৫ জন নির্বাচন কমিশনারও। ডিবি পুলিশ ২৫ জুন রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করে।