প্রকাশিত: ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২, ২০২৫
সারাদিন ডেস্ক
আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত গণহত্যা ও ছয়জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার মামলায় সাত আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। একইসঙ্গে মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে প্রিজন ভ্যানে করে অভিযুক্ত সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ হিল কাফি, শহিদুল ইসলামসহ সাতজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ উপস্থাপন করা হয়।
প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক অভিযোগে সাবেক এমপি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ১১ জনের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, যাদের মধ্যে আটজন রয়েছেন কারাগারে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে পাঁচজন নিহত হন এবং একজন গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে মৃত ও আহতদের একটি প্রিজন ভ্যানে তুলে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিহতরা হলেন—সাজ্জাদ হোসেন (সজল), আস সাবুর, তানজীল মাহমুদ সুজয়, বায়েজিদ বুসতামি ও আবুল হোসেন। একজনের পরিচয় এখনও অজ্ঞাত। প্রসিকিউশনের ভাষ্য মতে, এই হত্যাকাণ্ডকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে এবং গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা দায়ের করা হয়।
আসামিদের তালিকা
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন—সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সাভার সার্কেলের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফি, আশুলিয়া থানার সাবেক ওসি এ এফ এম সায়েদ (রনি), ডিবি পুলিশের সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল মালেক, আরাফাত উদ্দীন, শেখ আবজালুল হক, বিশ্বজিৎ সাহা ও কামরুল হাসান, সাবেক কনস্টেবল মুকুল চোকদার।
ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে যে নিহতদের প্রথমে গুলি করে হত্যা করা হয়, এরপর সরকারি বাহিনীর গাড়িতে তুলে মৃত ও আহতদের একসঙ্গে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক শুনানি শুরু হলে এটি হবে চলমান সময়ের অন্যতম চাঞ্চল্যকর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া।