ঝিনাইদহে মাদক স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটের হোতাসহ গ্রেপ্তার ২

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ৮:১৭ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২

দক্ষিণবঙ্গের মাদক স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটের প্রধান ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের রেজাউল ইসলাম পাঠানকে আবারো গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা দেড়টার দিকে মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর বাজার এলাকা থেকে দুই সঙ্গীসহ গ্রেফতার করা হয় তাকে ।

আটক অপর দুইজন হলো যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদের ছেলে মোঃ ইমরান হোসেন নয়ন এবং কোটচাঁদপুর বাজার পাড়ার সিরাজুলের ছেলে একরামুল হক।

প্রাথমিক ভাবে উদ্ধার করা হয়েছে চারটি চাইনিজ কুড়াল ও স্টিলের পাইপ। সর্বশেষ রেজাউল পাঠানকে গ্রেফতার করা হয় চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি। এখবর নিশ্চিত করেছেন মহেশপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ ইসমাইল হোসেন।

তিনি জানান রেজাউল পাঠানসহ ৯/১০জন মহেশপুরের খালিশপুর বাজারের হাজী মসজিদের কাছে ফাঁকা স্থানে গোপন বৈঠক করছে এমন খবরের ভিত্তিতে এলাকাটি ঘিরে ফেলা হয়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ৭জন পলিয়ে যায়। ধরা পড়ে যায় রেজাউল পাঠানসহ অপর দুইজন। অভিযানের নেতৃত্বদানকারী পুলিশ পরিদর্শক মোঃ ইসমাইল হোসেনের আরও জানান, পাশাপাশি দুইটি প্রাইভেটকার রেখে অভিনব কৌশলে বৈঠক করছিল তারা। রেজাউল পাঠানের বাড়ি কোটচাঁদপুর উপজেলা শহরের আদর্শ পাড়ায়। তার বাবার নাম মমিন পাঠান। বর্তমানে মহেশপুর উপজেলা পুরন্দপুর গ্রামে শশুরবাড়িতে থাকে সে(পাঠান)। ইতোপূর্বে কয়েক দফায় র‌্যাব পুলিশ গ্রেফতার করে। দীর্ঘ দিন কারাগারে ছিল সে। মাদক, র্স্বণচোরাচালান,অস্ত্র, ডাকাতির ঘটনায় অসংখ্য মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

পুলিশের একটি সূত্র জানায় রেজাউল পাঠান এক সময় কোটচাঁদপুর পৌরসভার কমিশনার ছিল। পুলিশের সোর্স থেকে আন্ডার ওয়ার্ল্ডের গডফাদার হয়ে উঠে সে। র্স্বণ এবং মাদক ধরিয়ে দেওয়ার কাজ করতো সে। এক পর্যায়ে চোরাকারবারিদের র্স্বণ ডাকাতি শুরু করে সে। ২০১৮ সালে ৪ জানুয়ারি মহেশপুর-জীবননগর সড়কে সোনার তরী পরিবহণ বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই বাস থেকে কয়েক কোটি টাকা স্বর্ণ লুটে নেয় পাঠান গং।

সূত্র বলছেন, রেজাউল পাঠানের সঙ্গে সেসময়কার মহেশপুর থানার ওসিসহ অন্তত ৫ জন পুলিশ সদস্য জড়িত ছিল। ওই বছরের (২০১৮ সালের) ৭ ও ৯ জানুয়ারি ডাকাতির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই (মহেশপুর) থানার দুইজন উপ-পরিদর্শকসহ পাঁচজন পুলিশ সদস্যর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ২০ জানুয়ারি ( ২০১৮ সাল) সোনারতরী পরিবহনের ঢাকার গাবতলি কাউন্টারের ম্যানেজার রেজাউল পাঠানের শশুর আশরাফুল ইসলাম পটলা ও কোটচাঁদপুরের আদর্শপাড়ার ইজিবাইক চালক হারুন অর রশীদ ওরফে ভাগ্নে মিলনকে গ্রেপ্তার করে।।তাঁদের কাছ থেকে তিন কেজি ৪০০ গ্রাম সোনা উদ্ধার করে পুলিশ। যার সেসময়কার বাজার মূল্য এক কোটি ২০ লাখ টাকা। এই ঘটনার পরে রেজাউল পাঠানের স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনা ফাঁস হয়ে পড়ে । এর আগে সে কয়েক দফায় ফেন্সিডিল অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয় র‌্যাব ও পুলিশের কাছে। মহেশপুর থানার সেসময়কার ওসি আহম্মেদুল কবীর ফেঁসে যান। সূত্র আরও জানিয়েছে রেজাউল পাঠান পুলিশের কতিপয় অসৎ সদস্যদের নিয়ে অত্রাঞ্চলে বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। বার বার আইনের ফাঁক দিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে সে। সব শেষ কারাগার থেকে বেরিয়ে গোপন অস্তানা গাড়ে সীমান্ত সংলগ্ন পুরন্দপুর এলাকায়। ইদানীং সীমান্ত দিয়ে স্বর্ণ পাচার ও ফেন্সিডিল চোরাচালান বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে বিজিবি কয়েকটি চালান আটক করেছে।

Nagad

রোববার ( ১৮ সেপ্টেম্বর) রেজাউল গং সড়কে ডাকাতির প্রস্তুতি জন্য বৈঠক করছিল। এমন খবর ছিল পুলিশের কাছে। যে কারণে অভিযানটি দ্রুত পরিচালনা করা হয়।