গাজায় মানবিক বিপর্যয়, ক্ষুধায় প্রাণ গেল শিশুসহ ৫৭ ফিলিস্তিনির
ইসরায়েলের টানা হামলা ও অবরোধে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে ফিলিস্তিনের গাজা। অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৭ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক ক্ষুধায় প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ।
শনিবার (৩ মে) গাজার মিডিয়া অফিসের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায় বার্তাসংস্থা আনাদোলু।


প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি অবরোধের কারণে খাদ্য ও ওষুধের প্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে গাজায় দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় গাজার আল-রান্তিসি শিশু হাসপাতালে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
গাজা মিডিয়া অফিস জানায়, সীমান্ত বন্ধ থাকায় খাদ্য, শিশুদের দুধ, পুষ্টিকর উপাদান ও ওষুধ না পৌঁছানোয় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ৬৩ দিন ধরে চলা অবরোধে ২৪ লাখের বেশি মানুষ চরম সংকটে রয়েছেন। তারা অভিযোগ করেছে, খাদ্যকে ‘যুদ্ধাস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল।
এপি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, গাজার ৮০ শতাংশ মানুষ আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হলেও অবরোধের কারণে সেই সহায়তাও পৌঁছানো যাচ্ছে না।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে ৯ হাজারের বেশি শিশু তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে। শুধু মার্চেই অপুষ্টি বৃদ্ধির হার ৮০ শতাংশে পৌঁছায়।
খাদ্য সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে কমিউনিটি কিচেন ও খাবার বিতরণ কার্যক্রম। হাসপাতালগুলোতেও স্থান ও চিকিৎসা সামগ্রীর সংকটে কেবল গুরুতর রোগীদেরই ভর্তি করা হচ্ছে।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫২ হাজার ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
এদিকে, গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একইসঙ্গে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলাও চলছে।