মুরাদনগরের ধর্ষণকাণ্ড: ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধে নারকীয় নাটক, জানাল র‍্যাব

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩:১০ অপরাহ্ণ, জুলাই ৪, ২০২৫

কুমিল্লার মুরাদনগরের বহুল আলোচিত ধর্ষণ ও নির্যাতন মামলার পেছনে ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। পুরো ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী শাহ পরান নামে এক ব্যক্তি, যিনি তার বড় ভাই ফজর আলীর সঙ্গে পূর্ব বিরোধের জেরে এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

শুক্রবার (৪ জুলাই) রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘পুরো ঘটনার মূলে ছিল দুই ভাইয়ের ব্যক্তিগত বিরোধ। শাহ পরান আগে প্রকাশ্যে বড় ভাইয়ের কাছে অপমানিত হন। সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতেই তিনি এক ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা করেন।’

২৬ জুন রাতে মুরাদনগরের বাহেরচর গ্রামে ভুক্তভোগী নারীর বাড়িতে ঘটে হৃদয়বিদারক সেই ঘটনা। র‍্যাব জানায়, সেদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে সুদের টাকার অজুহাতে ফজর আলী ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করেন। সেই সময় শাহ পরান ইমো অ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে একদল সহযোগীকে ডেকে আনেন। এরপর দরজা ভেঙে তারা ঘরে ঢুকে প্রথমে ফজর আলীকে মারধর করেন এবং পরে ওই নারীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন।

অভিযোগ রয়েছে, শাহ পরান ও তার সহযোগীরা জোর করে ফজর আলীকেও এই অপরাধে অংশ নিতে বাধ্য করে এবং পুরো দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে। ২৯ জুন সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে ঘটনাটি দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের জন্ম দেয়।

র‍্যাব জানায়, বৃহস্পতিবার কুমিল্লার বুড়িচং থানার কাবিলা বাজার এলাকা থেকে অভিযুক্ত শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ভিডিও ধারণে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও। এ পর্যন্ত ফজর আলীসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত আরও কয়েকজনকে ধরতে অভিযান চলছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহ পরান ঘটনার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব। তাকে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

Nagad

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, কিছুদিন ধরেই ওই নারীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন দুই ভাই। এ নিয়ে গ্রাম্য সালিশে শাহ পরানকে জনসম্মুখে চড়-থাপ্পড় মারেন ফজর আলী। সেই অপমান থেকেই প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠেন শাহ পরান।

২৯ জুন, ভিডিও ভাইরাল হওয়ার দিনই ভুক্তভোগী নারী মুরাদনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় শাহ পরান, ফজর আলী, আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজানসহ ১০-১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।