‘ফজলে রাব্বী মিয়ার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা ও মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা ছিল অতুলনীয়’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সংসদে বলেছেন, প্রয়াত ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া তাঁর নির্বাচনী এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য ছিলেন। তিনি জনগণের আস্থা ও বিশ^াস অর্জন করে বারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি বলেন ‘ফজলে রাব্বী মিয়া একটি আসন থেকে বারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি তার রাজনৈতিক দল পরিবর্তন করেও নির্বাচনে জিতেছেন, যার মানে তার ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অতুলনীয় ছিল।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের আস্থা ও বিশ^াস অর্জন করাটা একজন রাজনৈতিক নেতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তিনি সেটা করতে পেরেছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া, জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং পাঁচ সাবেক সংসদ সদস্যসহ বিশিষ্ট জনদের মৃত্যুতে আনিত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
শোক প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়। চলতি সংসদের সংসদ সদস্য ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণের পর রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ বারের বিজয়ী সংসদ সদস্য ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। এরপর তিনি যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগে সক্রিয় রাজনীতি করেন। একসময় জাতীয় পার্টিতে যোগ দিলেও আবার ফিরে আসেন ফজলে রাব্বি মিয়া। তিনি একজন দক্ষ আইনজীবী ছিলেন কাজেই আইন সম্পর্কে ভাল জ্ঞান রাখতেন এবং ডেপুটি স্পিকার হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাইবান্ধায় তাঁর নির্বাচনী এলাকা নদী ভাঙ্গন কবলিত, বন্যা ও মঙ্গা প্রবণ হলেও তিনি এলাকার মানুষের কল্যাণে সবসময় আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে গেছেন এবং ’৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই আওয়ামী লীগ সরকার সে এলাকার মঙ্গা দূর করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত আর কখনো মঙ্গা হয়নি।
তিনি তাঁর সরকারের প্রচেষ্টায় সে এলাকার নদী ভাঙ্গন রোধ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ সে অঞ্চলের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নের নানা পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, তিনি সবসময়ই তাঁর এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতেন কাজেই তাঁর মতন একজন নিবেদিত প্রাণ সমাজ হিতৈষী মানুষের মৃত্যু আমাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতির।
দীর্ঘদিন ধরেই বিশেষ দিনগুলোতে তিনি যখন আমেরিকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তাঁর স্বাস্থ্যের নিয়মিত খবর রেখেছেন বলেও উল্লেখ করেন।
তিনি তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদন জানান।
এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, শিনজো আবে ছিলেন বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু।
নিহত পাঁচ সাবেক সংসদ সদস্য হলেন মুক্তিযোদ্ধা এম আবু সালেহ (গণপরিষদ সদস্য), আব্বাস আলী মন্ডল, আলহাজ্ব মো. করিম উদ্দিন ভরসা, মোহাম্মদ শোয়েব ও খুরশেদ আরা হক।