মিয়ানমারে স্কুলে হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ, ১১ শিশু নিহত
মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের একটি স্কুলে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণে অন্তত ১১ শিশু নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় তিন শিক্ষকসহ আরও ১৭ জন আহত হয়েছেন।
গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলের তাবাইন টাউনশিপের একটি স্কুলে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে মিয়ানমার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাবতী’ এক প্রতিবেদনে এই খরব জানিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে একটি সন্ন্যাসী স্কুলের ওপর আচমকা গুলিবর্ষণ শুরু করে সেনাবাহিনীর দুটি এমআই-৩৫ হেলিকপ্টার। এতে ঘটনাস্থলেই সাত শিশু প্রাণ হারায়। আহত হন তিন শিক্ষক ও আরও ১৪ শিশু। পরে সেনারা মাটিতে নেমে গ্রামে অভিযান চালালে আরও দুই শিশু মারা যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলার পর প্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় হতাহতদের লাশ জোর করে তুলে নিয়ে গেছে সেনারা। আহতদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি এবং নিহতদের ১১ কিলোমিটার দূরে একটি সমাধিক্ষেত্রে দাহ করেছে তারা।
পরের দিন সেনারা আরও দুটি মরদেহ দাহ করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের ধারণা, ওই দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
হেলিকপ্টার থেকে হামলার পরে স্কুলটি দেখতে গিয়েছিলেন এমন এক গ্রামবাসী বলেন, গাড়িতে নিয়ে যাওয়া কয়েকটি শিশুর শরীরের নিচের অংশ বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন ছিল। একটি ‘খণ্ডিত’ শিশুকে মুড়িয়ে বাঁশের ঝুড়িতে রাখা হয়েছিল। স্কুলের ভেতরে রীতিমতো রক্তের পুকুর তৈরি হয়েছিল। ফ্যান, দেওয়াল, ছাদ- সব জায়গায় মাংসের টুকরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল।
লেট ইয়েট কোন গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, দুই সন্তানের খোঁজে স্কুলে গিয়েছিলেন তাদের বাবা-মা। কিন্তু সেখানে সন্তানদের পোশাক ছাড়া আর কিছুই ছিল না। জান্তা সৈন্যরা বাচ্চাদের শরীরের একটি অংশও রেখে যায়নি। তাই বাবা-মা সন্তানদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াও করতে পারেননি।
সারাদিন/২০ সেপ্টেম্বর/এমবি