রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঠেকাতেই সীমান্তে গোলাবর্ষণ: ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩:৪২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঠেকাতেই সীমান্তে গোলাবর্ষণ করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে মিয়ানমার বলে মন্তব্য করেছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম। প্রত্যাবাসন ঠেকাতেই আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করে মিয়ানমার ফায়দা লুটতে চায় বলে। তবে মিয়ানমারের উসকানিতে পা দেবে না বাংলাদেশ বলে জানান তিনি

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে চীন-জাপান ও পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।

এদিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে, কানাডা ও জাপানসহ ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাস প্রধানদের মিয়ানমারের সাম্প্রতিক আচরণ ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্রিফ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমরা বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বলেছি বাংলাদেশ হলো পশ্চিমে, দক্ষিণে হলো মিয়ানমার আর্মি আর উত্তরে আরাকান আর্মি তাদের গোলা কোনভাবেই বাংলাদেশে আসার কথা না। কাজেই জিওগ্রাফিক্যালি এটা তো হয় না, যদি কেউ ইচ্ছাপূর্বক না করে। কাজেই ইচ্ছাপূর্বক ভাবে আমাদের এই কনফ্লিক্টে (সংঘাত) জড়ানোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বলেছি আমরা এই প্রচেষ্টায় জড়াবো না। তাই আমরা এই বিষয়টি আপনাদের অবহিত করলাম। আপনারা যে অ্যাকশন নেওয়া মনে করেন সেটা আপনারা করবেন। তারা আমাদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

সব পর্যায়ে বাংলাদেশ যোগাযোগ করছে জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আজকে যারা এসেছিল তাদেরকে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের জায়গা দেওয়া হয়েছে। চরম ধৈর্য দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। তাদের কোনো উসকানিতে পা দিচ্ছে না বাংলাদেশ। এ বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তারা। সর্বস্তরে মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

Nagad

মিয়ানমারকে সেনাবাহিনী কর্তৃক কোন বার্তা দেওয়া হয়েছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা সর্ববিস্তরেই মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেছি। আমি শুধু এতোটুকুই বলবো আমরা সর্ববিস্তরেই যোগাযোগ রাখতেছি। যাতে করে মিয়ানমার বুঝতে পারে যে এ রকম একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা তাদের জন্য যেমন বিপদজনক, বাংলাদেশ এটি কখনো সঠিকভাবে গ্রহণ করবে না।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলে এক রোহিঙ্গা কিশোর আহত হয়। পরে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এ ঘটনায় ১৮ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকাস্থ মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায়।এদিকে, মিয়ানমারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আরাকান বাহিনীর সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গোলাগুলি চলছে। এ ঘটনায় ব্যবহৃত মর্টার শেল বাংলাদেশ সীমান্তে এসে পড়ছে।