পাবনায় গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যা, ৫ জনের যাবজ্জীবন
পাবনার আটঘরিয়ায় ধর্ষণের পর এক গৃহবধূকে হত্যা মামলায় পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো: মিজানুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর খন্দকার আব্দুর রকিব। আর আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আব্দুল আহাদ বাবু ও তৌফিক ইমাম খান।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আটঘরিয়া উপজেলার গোপালপুর গ্রামের মৃত রমজান আলী ছেলে ইদ্রিস আলী (৪০), আবু বকর শেখের ছেলে লিটন শেখ (২৯), তামেজ শেখের ছেলে আব্দুল্লা মেম্বার (৩৩), মৃত তজিম উদ্দিনের ছেলে খোয়াজ শেখ (৪০) এবং আব্দুস সালাম শেখের ছেলে আজমত শেখ (৩২)।
রায় ঘোষণার সময় আব্দুল্লাহ মেম্বার ছাড়া সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খন্দকার আব্দুর রকিব গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নিহতের ছেলে তাকে বাড়িতে রেখে পার্শ্ববর্তী গোপালপুরের কাজির বাজারে যায়। পরে রাতে বাড়িতে এসে দেখেন মা নেই। তখন তিনি মনে করেন তার মা হয়তো নানির বাড়ি গেছে। রাতের মধ্যে বাড়িতে ফিরবে ভেবে খাবার খেয়ে দরজা খোলা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন, মা বাড়িতে আসে নাই। তখন মামা বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানায়। এরপর আত্মীয়-স্বজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায় না। ঘটনার তিন দিন পর প্রতিবেশীর হলুদের খেতে লিচু গাছের সাথে দুর্গন্ধযুক্ত লাশ ঝুলতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে সংবাদ দেয়। এ সময় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এই ঘটনায় নিহতের ভাই সিদ্দিক প্রামানিক বাদী হয়ে ঘটনার ৪ দিন পর ১২ সেপ্টেম্বর আটঘরিয়া থানায় সাতজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে এই রায় দেন আদালত। তবে মামলার অপর দুই আসামি আবু বকর সিদ্দিক ও জিন্নাহ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খন্দকার আব্দুর রকিব বলেন, ধর্ষণের পরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ লিচুগাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়। সাক্ষ্য ও তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই রায় দিয়েছেন।
সারাদিন/১০ অক্টোবর/এমবি