পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় চুল্লি বসছে আজ

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৯:৩৯ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (১৯ অক্টোবর) পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটে রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভ্যাসেল (আরপিভি) বা পারমাণবিক চুল্লিপাত্র স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করবেন। সকাল ১০টায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি এ কাজের উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থাকবেন রুশ আণবিক শক্তি সংস্থা-রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সিই লিখাচেভ।

এ অনুষ্ঠানে রাশিয়ার পারমাণবিক সংস্থা রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সান্ডার লেখসেভ উপস্থিত থাকবেন বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছে।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ে দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি স্থাপনের কাজ শুরু হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রকল্পের কাজের সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়েছে। প্রথম ইউনিটের চুল্লি স্থাপনের কাজ শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি স্থাপন শুরু হচ্ছে, যা পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ইতিহাসে একটি বড় অর্জন বলে মনে করছেন রূপপুর প্রকল্পের কর্মকর্তারা।

গতকাল মঙ্গলবার এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন কার্যক্রমকে ঘিরে প্রকল্প এলাকায় শেষ মুহুর্তে সাজসজ্জার কাজ চলছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত বড় বড় বিলবোর্ড প্রকল্প এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে। উদ্বোধনী আয়োজনে প্রায় পাঁচ শতাধিক দেশি-বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত থাকবেন।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের চুল্লি পাত্র স্থাপনের কাজের উদ্বোধন হয়। ইতোমধ্যে প্রথম ইউনিটের কাজের ৭০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। প্রথম ইউনিটের চুল্লি স্থাপনের কাজ শুরু হওয়ার এক বছরের মধ্যেই দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি স্থাপনের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করায় প্রকল্পের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা যাবে বলে আশা করেন তিনি।

প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ সময় অনুযায়ী, ২০২৩ সালের শেষের দিকে প্রথম ইউনিটে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

Nagad

তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, শুধু ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শেষ হলেই উৎপাদন শুরু করা যাবে না। পারমাণবিক প্রকল্পের উৎপাদন শুরু করতে প্রকল্প এলাকার আনুষঙ্গিক সব ধরনের নির্মাণ কাজ শেষ হতে হবে। পাশাপাশি প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত মূল প্রকল্পের বাইরের অন্যান্য অবকাঠামোগত নির্মাণ শেষ হওয়া এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নিয়ম ও আইন মেনে উৎপাদনে যেতে হয় ফলে উৎপাদন শুরু হওয়ার সঙ্গে প্রতিটি বিষয় সম্পর্কিত।

প্রকল্প পরিচালক আরও জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৫৫ শতাংশ ভৌত নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এবং আর্থিক আগ্রগতি সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। প্রকল্পের কাজ যেভাবে এগিয়ে চলেছে তাতে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করে উৎপাদন শুরুর ব্যাপারে আশাবাদি।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে রাশিয়ার অর্থায়ন, ডিজাইন ও কারিগরি সহায়তায় ভিভিআর-১২০০ মডেলের দুটি পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন হবে। ২০১৭ সালে প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে।