‘সিত্রাং’র আঘাতে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:৫০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২২, ২০২২

ছবি- সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হওয়ায় এটি আরও ঘণীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এছাড়া আগামী দুই-এক দিনের মধ্যেই বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে এর প্রভাব পড়া শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘সিত্রাং’। এটি থাইল্যান্ডের দেওয়া নাম। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এটি উপকূলে আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

শনিবার (২২ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আন্দামান সাগর এবং তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। আগামী তিন দিনের মধ্যে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আবহাওয়া পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।

আরও জানানো হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

অপরদিকে, ভারতীয় অবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, লঘুচাপটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবারের (২২ অক্টোবর) মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এটি আগামীকাল রোববারের মধ্যে গভীর নিম্নচাপ পরিণত হতে পারে। এরপর এটি উত্তর দিকে বাঁক নিয়ে সোমবার (২৪ অক্টোবর) নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এরপর এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে মঙ্গলবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ইতোমধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশসহ একাধিক রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসাথে উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

Nagad

ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে প্রবেশের সময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার। ‘সিত্রং’ কতটা ভয়াবহ হতে পারে, সেটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আঘাত হানা তিনটি বড় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ এবং ক্ষয়ক্ষতি থেকে অনুমান করা যেতে পারে।

২০২১ সালের ২৬ মে ভারতের ওড়িশায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। যার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬৫ কিলোমিটার। যার প্রভাবে শুধুমাত্র বাংলাদেশেই তিন হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। মৃত্যু হয় সাত জনের।

২০২০ সালের ১৩ মে ভারত এবং বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে সুপার সাইক্লোন ‘আম্ফান’। যার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৬০ কিলোমিটার। শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ১ হাজর ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছিল। একইসাথে আম্ফানের কারণে ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় ১২৮ জনের মৃত্যু হয়।

এছাড়া ২০১৯ সালের ০৩ মে উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। যার প্রভাবে ৮১০ কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়। একইসাথে বাংলাদেশ ও ভারতে ৮৯ জনের মৃত্যু হয়।

সারাদিন/২২ অক্টোবর/এমবি