‘ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ঘর নাই, পোলাপান লইয়া গাছতলায় থাকি’

নিজের কষ্টার্জিত সহায়-সম্বল দিয়ে ঘর তুলেছিলেন, তাও আবার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে ভেঙ্গে যাওয়ায় পাঁচ সদস্যের এক পরিবার এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে।
পরিবারে প্রধান হলেন নাসির খাঁ (৫০), বাড়ি গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দি ইউনিয়নের দুই নং ওয়ার্ডের সুতাবাড়িয়া গ্রামে।

জানা গেছে, গলাচিপা উপজেলার সুতাবাড়িয়া গ্রামে দিন মজুর নাসির উদ্দিন পৈত্তিক সম্পত্তি হিসেবে ৬ শতাংশ জমির উপর লক্ষাধিক টাকা খরচ করে ৩ বছর আগে একটি ঘর তোলেন। যাতে ৫ সদস্যের পরিবার বসবাস করত। সদস্যরা হলেন স্ত্রী পারভীন বেগম (৪০) তিন ছেলে সুমন (১৮), সুজন (১১) ও নয়ন (৭)। তার স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজ করে। দুই জনের কষ্টার্জিত সহায় সম্বল যা ছিল তা খরচ করে ঘরটি তুলেছিলেন। নাসির খা’র স্ত্রী পারভীন বেগম জানালেন, এখন ছেলেদের নিয়ে লিচু গাছের নিছে ছাউনি হীন ডেরা বের দিয়ে কোন মতে বাস করছেন। শীতের মৌসুম আসন্ন, কিভাবে থাকবেন জানেন না। তারা আরো জানান, যেদিন মানুষের বাড়ীতে কাজ না করি সেদিন খেতে পারি না। মোগো কাজ করেই খেতে হয়। দুই ছেলেরে লেখাপড়া করামু কিভাবে জানি না। সরকার এত ত্রাণ দেয় মোরা কিছুই পাই না। ঘর ভাঙ্গার পর জনপ্রতিনিধির কাছে গিয়েছি, তারা কোনো সাড়া দেন নাই ।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ফারুক হাং ও ছালেহা বেগম জানান, নাসির খার পরিবারটি নিঃস্ব। এমন কোন জায়গা জমি নেই যার ওপর ঘরটি আবার তুলতে পারে। তাদের দাবী এই পরিবারটির দিকে সরকার ও স্থানীয় লোকজন যেন সহায়তার হাত যেন বাড়িয়ে দেন।

চিকনিকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: সাজ্জাদ হোসেন রিয়াদ জানান, বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে দেখছি। এ ব্যাপারে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো: মহিউদ্দিন আল হেলাল জানান, প্রাথমিকভাবে যতোটুকু আপনাদের মাধ্যমে অবগত হয়েছে তাতে আমি বুঝতে পেরেছি এই পরিবারটি মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে আছেন, তাদের তার জরুরী ভিত্তিতে সাহায্যের প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে দ্রুত বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।