কষ্ট করে সমাবেশে আসায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ফখরুলের

রংপুর সংবাদদাতা:রংপুর সংবাদদাতা:
প্রকাশিত: ৮:২৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০২২

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর-বলেন, কর্মীরা কষ্ট করে সমাবেশে আসায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘রংপুরের জেলাগুলোর সব নেতা–কর্মীরা যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে অসাধ্যসাধন করেছেন তাদের স্যালুট জানাই।’

আজ শনিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় নগরীর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশে দুর্ভিক্ষ হলে সব দায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে দুর্ভিক্ষ হলে মানুষ কোথায় যাবে? দেশে দুর্ভিক্ষ হলে সব দায় শেখ হাসিনার। ১৯৭৪ সালেও শেখ হাসিনার বাবার আমলেও দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। মানুষ না খেয়ে মারা গেছে। আমরা দুর্ভিক্ষ আসার আগেই শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটাব।

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ, এই রংপুর অঞ্চলের মানুষ আজ ভালো নেই। সারা দেশে খাদ্য সংকট, চিকিৎসা সংকট চলছে। চাল-ডাল-তেল, ডিমসহ সব নিত্যপণ্যের দাম মানুষের নাগালের বাইরে। মানুষ না খেয়ে থাকছে। বিদুৎ থাকছে না। কৃষকরা সার পাচ্ছে না, ফসলের দাম পাচ্ছে না। মানুষ কষ্টে আছে। আর আওয়ামী মন্ত্রী, এমপি ও নেতারা আরাম-আয়েশ করছে। তারা এসিতে থাকছে। এই টাকা কই থেকে আসছে। দুর্নীতি-চুরি ও লুটপাটের কারণে তারা টাকার পাহাড় গড়ছে।’

নিত্যপণ্যের দাম ও দুর্ভিক্ষ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘১০ কেজির চাল খাওয়াতে চেয়ে আওয়ামী লীগ এখন ৯০ টাকার চাল খাওয়াচ্ছে। চিনি-তেল, সাবানসহ সব কিছুর দামও বেড়েছে। শাকসবজিও মানুষ কিনতে পারছে না। এটা দুর্ভিক্ষের লক্ষণ। এর দায় শেখ হাসিনা ও তার সরকারকেই নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক মানুষ কাজ পাচ্ছে না, অনেকেই চাকরি হারাচ্ছে, ব্যবসা-বাণিজ্য পুঁজি হারাচ্ছে। প্রতিটি পদে পদে দুর্নীতি, লুটপাট ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হচ্ছে। মানুষের ভোটাধিকার ছিনেয়ে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। নির্যাতন করা হচ্ছে। সবক্ষেত্রেই একটা অরাজকতা বিরাজ করছে। তাই এই লুটেরা, ঘুসখোর, ভোট চোর ও দুর্নীতিবাজ সরকারকে বিদায় করতে হবে। তাদের আর রাখা যাবে না। বাংলাদেশের মানুষকে জেগে উঠতে হবে। আর একবার দেশকে স্বাধীন করতে হবে।’

Nagad

বিএনপির সমাবেশ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার নাকি জনগণকে ভয় পায় না, তাহলে দুই দিন আগে গাড়ি বন্ধ করল কেন? বাংলাদেশের মানুষ অবশ্যই জেগে উঠবে এবং এই ভয়াবহ এক নায়ক হাসিনা সরকারের পতন ঘটাবে। এই সমাবেশের একটাই কারণ। একজন মাত্র ব্যক্তি একটা মাত্র দল গত ১৫ বছর ধরে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নির্যাতন করছে। বিএনপির ওপর নির্যাতন করছে। আমাদের সমস্ত দেশটাকে তারা কুড়ে কুড়ে খেয়ে ফেলছে।

খালেদা জিয়া গৃহবন্দি আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেগম জিয়া অসুস্থ, তবুও তাকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হয় নাই। পরিবার, চিকিৎসক বলেছেন তাকে বাইরে পাঠানো দরকার। সে সুযোগও দেওয়া হয় নাই। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দেওয়া হয়েছে। ৬০০ বেশি মানুষকে গুম করেছে। হত্যা করেছে অনেককে।

গণসমাবেশে রাখেন রংপুর বিভাগীয় সমাবেশের সমন্বয়কারী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামা সামুর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, কৃষক দলের মহাসচিব শহিদুল ইসলাম (বাবুল), ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনোকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মোহাম্মদ জুয়েল প্রমুখ।