‘জঙ্গি ছেলের উদ্দেশে মা ’

‘যদি তোমার মাকে ভালোবাসো, কোনো হুমকির কাজ করবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩:৪২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২২

আব্বু… যদি তুমি আমার ম্যাসেজ পেয়ে থাকো, বলতে চাই, তুমি চরম একটা ভুল পথে আছো। তুমি তোমার মাকে বিশ্বাস করতে পারো। তোমার কাছে আমার অনুরোধ, তুমি যদি কখনো মাকে ভালোবেসে থাকো, তাহলে দেশের জন্য কোনো ধরনের হুমকির কাজ করবে না, বিশৃঙ্খলা করবে না। আমি অনুরোধ করছি তুমি আত্মসমর্পণ করো। প্রশাসন সদয় হবে’

কথাগুলো বলছিলেন সাবেক বিমান ক্রু পাহাড়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে নিখোঁজ রাইয়ান ওরফে আবু বক্করের মা আম্বিয়া সুলতানা এমিলি। বুধবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে এ কথা বলেন এমিলি।

তিনি বলেন, ‘চরম একটা ভুল পথকে সঠিক মনে করে সন্তানকে দিয়েছিলাম। আজকে আমার আদরের সন্তান বান্দরবানে পাহাড়ে অর্ধমৃত অবস্থায়। আমি জানি না আমার সন্তান বেঁচে আছে কি না। জানি না কখনো তাকে আর দেখতে পারবো কি না। এটা আমার মা হিসেবে চরম ব্যর্থতা। শিক্ষিত মেয়ে হয়ে আমি বুঝতে পারিনি। বুঝতে পারিনি কোনটা সঠিক কোনটা ভুল। আমার কোরআন-হাদিসের দক্ষতা কম ছিল। আমাকে ও আমার রাইয়ানকে ডিমটিভেটেড করা হয়েছে। ভুল পথে নেওয়া হয়েছে।’

শুধু তিনিই যে জঙ্গিবাদে জড়িয়েছেন তা নয়, নিজের ১৫ বছর বয়সী ছেলে আবু বক্কর রিয়াসাদ রাইয়ানকে নিয়েছেন সেই পথে। এমিলি ঘরে ফিরে এলেও তার সন্তান এখনো নিখোঁজ। ছেলেকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সাংবাদিকদের কাছে আকুতি জানিয়েছেন এই মা।

এমিলি মূলত একজন কেবিন ক্রু ছিলেন। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজে করেছেন চাকরি। এছাড়া বিমান বাংলাদেশেও খণ্ডকালীন চাকরি করেছেন। পরিবারসহ থাকতেন নারায়ণগঞ্জে। ভালোই ছিল তাদের জীবন। হঠাৎ করে এমিলির ছেলের গৃহশিক্ষক আল-আমিনের মাধ্যমে তার জীবন পাল্টে যায়। সেই শিক্ষকের মাধ্যমেই এমিলি ও তার ছেলে রাইয়ান নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়’তে উদ্বুদ্ধ হয়ে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন।

এমিলি জানান, তার স্বামী ছেলের শোকে অসুস্থ। আত্মীয়-স্বজন সবাই পাগল প্রায়।

Nagad

এ সময়ে এমিলি তার সন্তানকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, ‘আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ করছি, আমাদের ছোট ছোট সন্তানেরা পাহাড়ে না খেয়ে কীভাবে আছে। ওরা তো ঘরেই ছিল, মায়ের বুকে ছিল। ওরা ওখানে কীভাবে বাঁচবে। ওরা নিজেও জানে না কোথায় তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ওদের ফিরিয়ে আনুন, ওদের সুযোগ দিন, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার, মায়ের বুকে ফিরে আসার। ওদের উদ্ধার করুন।’