জজ পরিচয়ে কল দিতেন পুলিশকে-করতেন প্রতারণা
সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে আবু বক্কর সিদ্দিক (২০) নামে এক ভূয়া জজ’কে আটক করছে ঢাকা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বুধবার (০৯ নভেম্বর) দুপুরে এসব তথ্য প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ বিপ্লব।
এর আগে মঙ্গলবার (০৮ নভেম্বর) বিকেলে আশুলিয়া জিরাবো এলাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার আবু বক্কর সিদ্দিক রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানার মাউরাট গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে। তিনি আশুলিয়ার জিরাবোরের সফিকুল কাজীর ভাড়াটিয়া।
আবু বক্কর সিদ্দিক রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় কখনও বিচারপতি ও কখনও জজ পরিচয় দিয়ে স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে ফোন দিয়ে অভিনব কায়দায় সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে টাকা আদায় করত।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত কয়েক মাস যাবৎ আবু বক্কর সিদ্দিক বিভিন্ন সময়ে নিজেকে কখনো বিচারপতি কখনো জজ পরিচয় দিয়ে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর মানিকগঞ্জ ও রাজবাড়ী সহ দেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ অফিসারদের ফোন করে।
এছাড়াও পুলিশ অফিসারদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করার জন্য সে ৯৯৯ এ ফোন দেয়। সে একটি নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে সেখানে যেকোনো একটি গাড়ীকে টার্গেট করে। অতঃপর ঐ স্থানে কর্মরত একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে নিজেকে জজ বা বিচারপতি পরিচয় দিয়ে গাড়ীটিকে আটক করতে বলে।
পুলিশ অফিসার গাড়ীটিকে আটক করলে সে পুলিশের মাধ্যমে গাড়ীর মালিকের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। তারপর গাড়ীর মালিকের নিকট থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ বিভিন্ন অংকের টাকা বিকাশের মাধ্যমে নিয়ে যায়। তারপর পুলিশকে গাড়ীটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলে। এইভাবে সে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, এছাড়াও সে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফোন দিয়ে নিজেকে জজ/বিচারপতি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে অবৈধ গাড়ী রয়েছে মর্মে অভিযান পরিচালনা করতে বলে।
এভাবে সে সাধারণ মানুষকে দীর্ঘদিন যাবত হয়রানী করে আসছে। এমন ধরনের একটি অভিযোগ ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান এর নিকট আসলে তিনি অপরাধীকে গ্রেফতারের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিবি মোবাশশিরা হাবিব খান কে নির্দেশ প্রদান করেন। পরে গতকাল অভিযান পরিচালনা করে তাকে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ বিপ্লব বলেন, আমাদের অফিসার জহিরুলের নেতৃত্ব একটি চৌকস টিম উক্ত প্রতারককে গ্রেফতার করার জন্য কাজ শুরু করে।
তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে জেলা গোয়েন্দা শাখা (উত্তর) এর একটি আভিযানিক টিম উক্ত প্রতারককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রতারকের ব্যবহৃত মোবাইল ও সিম জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে মামলা রুজুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা সে ব্যাপারে তদন্ত অব্যাহত আছে।