একাত্তরে পা রাখলেন রুনা লায়লা

বিনোদন ডেস্কবিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:০৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০২২

উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লার জন্মদিন আজ (১৭ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার। আজকের এই দিনে ৭০ পেরিয়ে ৭১ বছরে পা দিয়েছেন তিনি।

জীবনের বেশিরভাগ সময়ে রুনা উপহার দিয়ে অসংখ্য জনপ্রিয় সব গান। গানের মাধ্যমে যিনি বাংলা সংস্কৃতিকে সকল মানুষের কাছে পরিচিত করিয়েছেন।

এক সাক্ষাৎকারে রুনা লায়লার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, গান না করলে তিনি জীবনে কী করতেন? জবাবে নির্ভাবনায় তিনি বলেছিলেন, আমাকে শিল্পী ছাড়া আর কোনোরূপেই পাওয়া যেত না। আমার জন্মই হয়েছে গানের জন্য। গান ছাড়া আমি আর কিছুই পারি না।

কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা ১৯৫২ সালে ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ আলী ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং মা আনিতা সেন ওরফে আমেনা লায়লা ছিলেন সংগীতশিল্পী। তার মামা সুবীর সেন ভারতের বিখ্যাত সংগীতশিল্পী।

রুনার বয়স যখন আড়াই বছর, তখন তার বাবা রাজশাহী থেকে বদলি হয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের মুলতানে যান। সে সূত্রে তার শৈশব কাটে পাকিস্তানের লাহোরে। সংগীতশিল্পী মায়ের কাছে শিখেছেন সংগীতের প্রাথমিক ব্যাকরণ। এরপর করাচির সংগীতজ্ঞ আব্দুল কাদের পিয়ারাঙ্গ ও হাবীব উদ্দিন খানের কাছে তামিল নেন। মাত্র ছয় বছর বয়সে গান শুরু করেন রুনা। এরপর মাত্র সাড়ে ১১ বছর বয়সে পাকিস্তানের ‘জুগনু’ সিনেমার মাধ্যমে প্লেব্যাকের খাতায় নাম লেখান তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্লেব্যাক করেন পাকিস্তানের অনেক সিনেমাতে।

দীর্ঘ সংগীত জীবনে রুনা লায়লা ১৮টি ভাষায় ১০ হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন। স্বাধীনতা পদকসহ বহুবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ৫৭ বছরের বর্ণাঢ্য সঙ্গীত ক্যারিয়ার শুরু করেন ১২ বছরের এক কিশোরের জন্য গান গেয়ে।

Nagad

১৯৬৪ সালে বাবা সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ আলীর অনুমতি নিয়ে সাড়ে ১১ বছর বয়সে পাকিস্তানের ‘জুগনু’ সিনেমায় প্রথম গান করেন। ‘গুড়িয়াসি মুন্নী মেরি ভাইয়া কি পেয়ারি’ গানটি কণ্ঠে তোলার জন্য একটানা দুই মাস প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। নব্বইয়ের দশকে মুম্বাইয়ে পাকিস্তানী সুরকার নিসার বাজমির সুরে একদিনে ১০টি করে ৩ দিনে ৩০টি গানে কণ্ঠ দিয়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও নাম লিখিয়েছিলেন তিনি।

বাংলা-হিন্দি-উর্দু ছাড়াও গুজরাটি, পাঞ্জাবি, সিন্ধি, পশতু, বেলুচ, আরবি, পারসিয়ান, মালয়, নেপালি, জাপানি, ইতালীয়, স্প্যানিশ, ফরাসি ও ইংরেজিসহ ১৮টি ভাষার গান তাঁর কণ্ঠে প্রাণ পেয়েছে। রুনা লায়লার নিজের গাওয়া সর্বশেষ একক মৌলিক গান ছিল ‘ফেরাতে পারিনি’।

গুণী এই গায়িকা ক্যারিয়ার জুড়ে পেয়েছেন নানা পুরস্কার। এসবের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ থেকে ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার। এছাড়া ভারত থেকে পেয়েছেন সায়গল পুরস্কার। পাকিস্তান থেকে অর্জন করেছেন নিগার, ক্রিটিক্স, গ্র্যাজুয়েটস পুরস্কারসহ জাতীয় সংগীত পরিষদ স্বর্ণপদক।

সারাদিন/১৭ নভেম্বর/এমবি