চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে

চট্টগ্রাম সংবাদদাতাচট্টগ্রাম সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ৫:১৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৮, ২০২২

ছবি- সংগৃহীত

দীর্ঘ ১০ বছর পর আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম সফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ০৪ ডিসেম্বর নগরীর টাইগারপাস মোড়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন তিনি। আরও আগে থেকেই চলছে নগর ও উপজেলায় প্রচার-প্রচারণা। এরই মধ্যে ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে বন্দরনগরী।

চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভার প্রস্তুতি হিসেবে তিন সপ্তাহ আগেই চিটাগাং উইম্যান চেম্বারের মেলা স্থগিত করা হয়। এরই মধ্যে প্রশাসন বলে দিয়েছে আগামী ০৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রামে কোনো ধরনের নাগরিক কর্মসূচি পালন করা যাবে না।

উৎসাহ-উদ্দীপনায় চলছে প্রধানমন্ত্রীকে বরণের প্রস্তুতি। সমাবেশস্থলের আশপাশ থেকে শুরু করে নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় এখন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের ব্যানার-পোস্টার-ফেস্টুন-তোরণে ছেয়ে গেছে বন্দরনগরী।

সেখানে শুধু সংগঠন নয়, ব্যক্তির পরিচয় ও প্রচারণাও শোভা পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই নেতারা বড় বড় ব্যানার-পোস্টার তুলেছেন। পোস্টার-ব্যানারে কেউ প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা এবং কেউ কেউ সমাবেশে সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, নেতাকর্মী সবাই প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনার অপেক্ষায়। কারণ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে আসতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাও।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে দিনে-রাতে। মঞ্চের কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণের নেতাদের তত্ত্বাবধানে সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।

Nagad

উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রত্যেক ইউনিয়ন থেকে কর্মী-সমর্থকরা সমাবেশে যোগদান করবে। উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যরা তাদের সমন্বয় করছেন। উত্তর চট্টগ্রামের ৭ উপজেলা থেকে জনসভায় যোগ দিতে বাস-ট্রাক ভাড়া করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জানান, চট্টগ্রামের জনসভা থেকে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে বিজয়ের জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেবেন। আমরা স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমাগম ঘটিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ, আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে। আর চট্টগ্রামের মানুষ আওয়ামী লীগের সাথে রয়েছে ও থাকবে।

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রচারে পলোগ্রাউন্ড ও আশপাশের এলাকায় লাগানো হবে ঢাকা থেকে আনা ‘কলরেডি’র ১৫০ মাইক। চট্টগ্রামের জনসভার বাকি আরও ৭ দিন থাকলেও এভাবেই প্রধানমন্ত্রীকে বরণে বিরাট আয়োজন চলছে। এদিন ১০ লাখ মানুষের উপস্থিতি ঘটানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে আওয়ামী লীগ।

মঞ্চ তৈরির কাজে নিয়োজিত সাহাবুদ্দিন ডেকোরেটার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মো: সাহাবউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, নৌকার আদলে ১৬০ ফুট দীর্ঘ মঞ্চটি তৈরির কাজ চলছে। মঞ্চের মাঝখানের ৪০-৮০ ফুটের মধ্যে ২০০ অতিথি বসবেন। মঞ্চের উচ্চতা হবে সাত ফুট। এছাড়াও মঞ্চের সামনে মুক্তিযোদ্ধা, ভিআইপি ও মহিলাদের বসার জন্য পৃথক প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন গণমাধ্যমকে বলেন, মহানগর-উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হবে এই জনসভা। ৪৪টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড থেকে দুই লাখের বেশি মানুষ সমাবেশে যোগদান করবেন। এক একটি ওয়ার্ড থেকে ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ আসবেন। এছাড়া যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, তাঁতী লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সমর্থকরা যোগ দিবেন জনসভায়। পলোগ্রাউন্ডের বাইরে কয়েক বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে লাগানো হবে মাইক।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো: রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের গৌরবময় ভূমিকা আছে। চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নিজের কাঁধে নিয়ে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এবারও হয়তো চট্টগ্রামবাসীকে নিরাশ করবেন না। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে স্বাগত জানাতে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

সারাদিন/২৮ নভেম্বর/এমবি