করদাতার দেওয়ার তথ্যের ভিত্তিতেই কর নির্ধারণ, রিটার্ন দাখিল হবে সহজ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ১০:৩২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২৩

মন্ত্রীপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। ছবি: সারাদিন ডট নিউজ

আয়কর আইন-২০২৩ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এটি আইনে কার্যকর হলে ব্যবসায়ীদের রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে।

আজ সোমবার (২৩ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে বিকেলে সচিবালয়ে বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফিং করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আয়কর আইন-২০২৩-এ মূলত আগের আইনটিকে সহজ করা হয়েছে। আসলে জটিলতাগুলো দূর করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া সহজ করা হয়েছে। আইনটিতে ৩৪৮টি ধারা আছে। অনেক বড় আইন। বর্তমানে ব্যবসায়ীদের রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে ২৯টি বাধ্যবাধকতা অনুসরণ করতে হয়। নতুন এ আইন কার্যকর হলে ১২টি অধ্যায় পূরণ করলেই হবে।’

প্রস্তাবিত আইনের উদ্দেশ্যগুলো উল্লেখ করে সচিব বলেন, ‘মানুষ যাতে ট্যাক্স দিতে উৎসাহ পায় এ জন্যই নতুন এ আইন কর হচ্ছে। এই আইনের ফলে কর দিতে মানুষের হয়রানি কমবে। একই সঙ্গে ট্যাক্সের পরিধিও বাড়বে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান, ‘এই আইনে করদাতার করের পরিমাণ নির্ধারণ করে দেওয়ার ক্ষমতা আয়কর কর্মকর্তার থাকছে না। করদাতার দেওয়ার তথ্যের ভিত্তিতেই কর নির্ধারিত হবে। ফলে কর্মকর্তার চাপিয়ে দেওয়া করের পরিমাণ ঠিক করার ফলে আপিলের পরিমাণ কমবে। সেই সঙ্গে কমবে করদাতার হয়রানিও।’

সামরিক শাসনামলে জারি করা আইনগুলো পরিবর্তন করার বিষয়ে বিষয়ে নির্দেশনা আছে সুপ্রিম কোর্টের। আইনগুলো পরিবর্তনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ আইনগুলো দ্রুত পরিবর্তনের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-বলেও জানান সচিব।

Nagad

ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা ছিল সামরিক শাসনামলে জারি করা আইনগুলো পরিবর্তন করতে হবে। যেগুলো সামরিক শাসনামলের আইন বলে চিহ্নিত হয়েছিল, সেগুলোর পরিবর্তনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। তবে বাকি যেগুলো আছে, সেগুলোর পরিবর্তন প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সেগুলো দ্রুত শেষ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন।’

কতটি আইনে পরিবর্তন বাকি আছে, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমার যতদূর মনে পড়ে ১০-১২টি হবে।’ তবে সবগুলো আইন পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, ‘কোনোটির কাজ থেমে নেই। দেখা গেছে এসব আইন মন্ত্রিসভায় পাস হয়ে গেছে, হয় সংসদে আছে কিংবা ভোটিংয়ের পর্যায়ে আছে।’

এছাড়াও আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘এজেন্সি টু ইনোভেট’(এটুআই) আইন এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোতে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য এই আইন করা হচ্ছে।

সচিব বলেন, এটুআই প্রথমে ছিল অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন, তারপর অ্যাস্পায়ার টু ইনোভেট, এখন এসে বলছি এজেন্সি টু ইনোভেট। এটি আগে ছিল প্রকল্প। এখন এজেন্সি হিসেবে গঠনের জন্য আইনের খসড়া অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছিল। মন্ত্রিসভা আইনটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে অনুমোদন দিয়েছে।’

মাহবুব হোসেন বলেন, ‘যে এজেন্সি গঠিত হবে তা তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে সরকারের একটা পলিসি তৈরি বা ইনোভেশনকে উৎসাহিত করবে- এ রকম একটা পরিবেশ তৈরির জন্য সহযোগিতা দেবে। এজেন্সিটি তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক উদ্ভাবনীর সংস্কৃতি বিকাশে কাজ করবে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এজেন্সি পরিচালনার জন্য ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা বোর্ড থাকবে। বোর্ডের সভাপতি হবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী। আর একটি থাকবে নির্বাহী কমিটি, সেখানে ওই বিভাগের সচিব সভাপতি হবে। এছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের যে রকম সাংগঠনিক কাঠামো থাকে সেভাবে পরিচালিত হবে।’