‘নতজানু ও ব্যর্থ জাতি তৈরির জন্য কাজ করে যাচ্ছে সরকার’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের এক আলোচনা সভায় বলেন, এই সরকার একটি নতজানু ও ব্যর্থ জাতি তৈরির জন্য পরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের শেকড়ে টান দিয়েছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মকে ব্যর্থ করতে শিক্ষা ব্যবস্থায় হাত দিয়েছে। কেউ কিন্তু কোনো প্রতিবাদ করছে না। আমাদের তো আলাদা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এবং পরিচয় আছে। কেনো সত্যকে সত্য ও মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে ভয় কেনো? আজকে শিশুদেরকে ভ্রান্ত ধারণা ও ইতিহাস শিক্ষা দিচ্ছে। আজকে আমাদের পরিচয় ভুলিয়ে দিতে চায়। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে হবে। এটা জাতির অস্তিত্বের লড়াই। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাই।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এর বিষয় ছিল ‘অপরিনামদর্শী কারিকুলাম মানহীন পাঠ্যপুস্তক : দেশের ইতিহাস, ঐতিয্য সংস্কৃতি ধব্বংসের নীল নকশা’।
ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান ও হেলেন জেরিন খানের পরিচালনায় সভায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. শাহ শামীম আহমেদ। তাঁরা ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বিভিন্ন পাঠ্যবইয়ের কার্বন ডাই অক্সাইড ও মানুষের উৎপত্তি নিয়ে বিতর্কিত তত্ত্বসহ বেশকিছু বইয়ের ‘ভুল’ এবং ‘অসত্য তথ্য’ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, সরকার আমাদের পাল্টে দিতে চায়। যার প্রমাণ এই পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস বিকৃতি ও ভুল তথ্য সংযোজন। আজ যেসব সন্তান যারা প্রাথমিক শিক্ষা নেয় সেটা তার সারাজীবনের জন্য থেকে যায়। এই শিক্ষাকে পুঁজি করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। প্রাথমিক বিদ্যালয় হলো শিক্ষার মূল। দুর্ভাগ্যবশত এখনো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। যদিও পাকিস্তান আনলেও এ ধরনের পরীক্ষা ও বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছিল। শুধু বারবার পরীক্ষা ও শিক্ষানীতি হচ্ছে। এখনো সেটা চলছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ পাঠ্যপুস্তকে অজস্র ভুলে ভরা ইতিহাস ও তথ্য সংযোজন করা হয়েছে। আর সেগুলোই নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের শেখানো হচ্ছে। যারা কারিকুলাম তৈরি করেন কেউ কিন্তু ভাবেন না যে ছেলেমেয়েরা কী শিখছে? জাতির মূল জায়গা হলো শিক্ষা। আর সেখানেই হাত দিয়েছে সরকার। এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস ইসলাম, অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, অধ্যাপক ড. আব্দুল করিম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, শিক্ষকনেতা মো. জাকির হোসেন, অধ্যাপক মো. আল আমিন, অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক মামুনুর রশিদ, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, অধ্যাপক মাসুদুল হাসান, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক শরিফুল করিম, অধ্যাপক শের মাহমুদ, অধ্যাপক ড. তৌফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক তোজাম্মেল হোসেন, অধ্যাপক আনিসুর রহমান প্রমুখ।