জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকারের সমালোচনায় এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ও গড়িমসির কড়া সমালোচনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “কোনো একটি পক্ষ যদি দলীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে, তাহলে সরকারের উচিত ভয় না পেয়ে অন্য পক্ষ ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করা।”
সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব মন্তব্য করেন।


নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র হচ্ছে জুলাই ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, শহীদ, আহত ও নেতৃত্বদের অবদান, রাজনৈতিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা এবং জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষার সংজ্ঞায়ন নিশ্চিতে একটি জাতীয় দলিল। ভবিষ্যতে এ দলিল আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তি পাবে।’
তিনি আরও দাবি করেন, ‘৩১ ডিসেম্বর ছাত্র নেতৃত্ব একটি ঘোষণাপত্র দিতে চেয়েছিল, কিন্তু সরকার সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সেটিকে সরকারিভাবে ঘোষণা করতে চেয়েছিল বলেই ছাত্ররা পিছিয়ে আসে।’
নাহিদ বলেন, ‘সরকার বিভিন্ন পক্ষ থেকে খসড়া চাইলেও, প্রতিশ্রুতি দিয়ে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। কেন ব্যর্থ হয়েছে, সে প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয়নি সরকার। আমরা চাই, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগেই এ ঘোষণাপত্র জারি করা হোক এবং সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার কমিটমেন্ট থাকতে হবে।’
তিনি জানান, জুলাই ঘোষণাপত্র শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকেই পাঠ করা হবে। একই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘সরকার যদি কোনো উদ্যোগ না নেয়, আমরা বসে থাকব না। নিজেদের ইশতেহার আমরা প্রকাশ করব। অন্য পক্ষদেরও বলব, আপনারাও ইশতেহার তৈরি করুন। একসঙ্গে দলিল তৈরি হলে সরকারকে তা গ্রহণ করতে বাধ্য করা যাবে।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই সনদে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা থাকবে, যেখানে সংবিধানের কোন কোন জায়গায় পরিবর্তন আসবে, সে বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যের দলিল তৈরি হবে। এই সনদ কার্যকর হবে গণভোট, গণপরিষদ অথবা সংসদীয় সংশোধনীর মাধ্যমে। পরবর্তী সরকার বাধ্য থাকবে এই সংস্কার বাস্তবায়নে।’
তিনি জানান, জুলাই ও অগাস্টের মধ্যেই ঘোষণা ও সনদ দুইটিই প্রকাশ সম্ভব। আর যদি তা না হয়, তবে সরকারের ‘জুলাই উদযাপন’-এ অংশগ্রহণের নৈতিক অধিকার থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শেষে দলের কর্মসূচির কথা স্মরণ করিয়ে তিনি লিখেন, ‘আগামীকাল থেকে আমাদের পদযাত্রা শুরু। ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রায়’ আপনাদের স্বাগতম। পথে প্রান্তরে কথা হবে আপনাদের সঙ্গে।’