তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়াল
সাত দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। ইতোমধ্যে তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে বিধ্বংসী ভূমিকম্পে মৃতের এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৫১ জনে। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া লোকজনকে উদ্ধারে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারীরা। বিভিন্ন দেশ থেকে উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছে কয়েক হাজার সদস্য।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুই দেশ মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা ২১ হাজার ৫১ জন। তবে জাতিসংঘ হুঁশিয়ারি দিয়েছে এই ধ্বংসযজ্ঞের পুরো চিত্র এখনো পরিষ্কার না। মানে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে।ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু ভূমিকম্পের পর প্রায় ১০০ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ায় কাউকে আর জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা কমে এসেছে।
অপরদিকে যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তারাও নিদারুণ কষ্টে আছেন। অসংখ্য মানুষ তীব্র ঠাণ্ডার মধ্যে আশ্রয় ও খাবার ছাড়া থাকায় তাদের জীবনও সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ধ্বংসযজ্ঞের পুরো চিত্র এখন ‘আমাদের চোখের সামনে উন্মোচিত হচ্ছে।’
এদিকে তুরস্কের সাধারণ মানুষ এখনো উদ্ধারকাজের ধীরগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, কিছু কিছু জায়গায় ভূমিকম্পের তিন দিন পর উদ্ধারকারীরা এসেছেন। ফলে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েও যারা জীবিত ছিলেন তারা তীব্র ঠাণ্ডা ও পানির অভাবে মারা গেছেন।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত অকতের দেওয়া তথ্যমতে, শুধু তুরস্কেই এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৭ হাজার ৬৭৪ জন। অন্যদিকে, সিরিয়ায় কমপক্ষে ৩ হাজার ৩৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে দেশ দুটিতে। ত্রাণের জন্য হাহাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সহায়তার হাত বাড়িয়েছে।
সোমবার ভোরের দিকে যখন মানুষজন ঘুমিয়ে ছিলেন ঠিক তখনই আঘাত হানে এই ভূমিকম্পে। ইউএসজিএস জানায়, সোমবার স্থানীয় সময় ৪টা ১৭ মিনিটে প্রথম কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। কম্পনের উৎসস্থল ছিল তুরস্কের গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূগর্ভের প্রায় ২৪ দশমিক ১ কিলোমিটার গভীরে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রথমবারের মতো যায় জাতিসংঘের সহায়তা। তবে সেখানকার উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে তাদের যে সরঞ্জাম প্রয়োজন ছিল, সেগুলো দেয়া হয়নি। এ বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা। তবে জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস জানিয়েছেন, সিরিয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে আরও সহায়তা পৌঁছে যাবে। সূত্র: বিবিসি