বাবার ব্যবসায়ী বিরোধের জেরে খুন হয় শিশু তানভীর

সাভার প্রতিনিধি:সাভার প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ৫:৩০ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২৩

সাভারের আশুলিয়ায় মাদ্রাসা পড়ুয়া ৮ বছরের শিশু তানভীরকে অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল। বাবার সাথে ব্যবসায়িক বিরুদ্ধে জেরে ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্বীকার করেছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান।

এর আগে বুধবার (৮ মার্চ) রাতে আশুলিয়ার টংগাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ঢাকা জেলার বাসিন্দা মোঃ আনোয়ার হোসেন (২০), মোঃ সাকিব হোসেন (২৬) ও মোঃ তামজিদ আহমেদ @ রাফি (১৪)। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়ার যায়নি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‍্যাব জানায়, গত ৭ মার্চ আশুলিয়ার টংগাবাড়ী এলাকায় মাদ্রাসা পড়ুয়া ৮ বছরের শিশু তানভীর নিখোঁজ হলে পরদিন ভুক্তভোগীর পিতার নিকট ফোনের মাধ্যমে অজ্ঞাত পরিচয়ে এক ব্যক্তি ভুক্তভোগীকে অপহরণ পরবর্তী মুক্তিপণ দাবীসহ হুমকি দেয়। এমতাবস্থায় ভুক্তভোগী পিতা নিরুপায় হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীসহ র‍্যাব-৪ বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। র‌্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল ঘটনাটি ছায়া তদন্তের পাশাপাশি ও জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করে। ইতোমধ্যে আশুলিয়া থানাধীন টংগীবাড়ী এলাকায় জনসাধারণ একটি বস্তাবন্দী শিশুর লাশ দেখতে পেয়ে থানায় অবহিত করে এবং র‌্যাব-৪ একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম শিশু তানভির আহম্মেদের লাশ সনাক্তকরণ ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামীদের সম্পর্কে সুনিশ্চিত হবার পর মূলহোতাসহ নিম্নোক্ত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়।

র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা জানায়, ভুক্তভোগী পরিবার ও গ্রেপ্তার আসামীরা একই এলাকায় বসবাস করার সুবাদে তারা একে অপরের পূর্ব পরিচিত। এই হত্যাকাণ্ডের মুলহোতা আনোয়ার হোসেন এর সাথে ভুক্তভোগীর পিতা মোঃ সোলায়মানের দীর্ঘ দিন যাবত বাবসায়িক লেনদেন নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। ভুক্তভোগীর পিতা সোলায়মান আসামী আনোয়ার হোসেনের নিকট পাওনা টাকা চাইলে আসামী আনোয়ার পাওনা টাকা দিবে বলে কালক্ষেপণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীর পিতা সোলায়মান গ্রেফতার আসামী আনোয়ারের বাড়ীতে গিয়ে টাকা চাওয়ার প্রেক্ষিতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং সোলায়মান দ্রুত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আনোয়ারকে বকাবকি করে এতে আনোয়ার অপমান বোধ করে।

Nagad

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আনোয়ার ক্ষিপ্ত হয়ে সোলায়মানের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সোলায়মানের শিশু পুত্র নিহত তানভিরকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করে। গত ০৭ মার্চ রাতে পূর্ব পরিকল্পনামতে আসামী আনোয়ার নিহত তানভিরকে সুকৌশলে ভুক্তভোগীর পিতার সদ্য কেনা জমি দেখার কথা বলে আশুলিয়া থানাধীন শ্রীখন্ডিয়া এলাকায় রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে তানভিরকে হত্যা উদ্দেশ্যে গলায় চেপে ধরে ও মাটিতে আছার দেয়। এক পর্যায়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে তার মৃত নিশ্চিত করে লাশটি সেখানে ফেলে হত্যাকারীরা নিজ নিজ বাসায় ফিরে আসে। পরের দিন ০৮ মার্চ ভোরে আসামীরা নিহত শিশুর লাশটি গুম ও হত্যার প্রমাণ লুকানোর জন্য একটি বস্তায় লাশটি বস্তা বন্দি করে সবজির গাড়ীতে করে আশুলিয়া থানাধীন টংগাবাড়ী এলাকায় রাস্তার পাশে ময়লার ড্রেনে ফেলে দেয়।