সিনেমাগুলো যেন জীবনধর্মী হয়: প্রধানমন্ত্রী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৬:৫৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ৯, ২০২৩

দপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সিনেমাগুলো যেন জীবনধর্মী হয়। সেগুলো কিন্তু মানুষকে বেশি আকর্ষণ করে। কারণ মানুষ তার জীবনের প্রতিচ্ছবি সেখান থেকে পায়। একটা সিনেমা পারে একটা মানুষের জীবন পাল্টে দিতে বা একটা সমাজকে পাল্টে দিতে। সিনেমা, নাটক সব ক্ষেত্রেই কিন্তু এর একটা অবদান রয়েছে। মানুষের চিন্তা-চেতনার উৎকর্ষ ঘটাতে পারে। অন্যায় অপরাধ থেকে দূরে রাখতে পারে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২১ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র শিল্পকে উন্নত করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। বেশ কিছু সিনেমা আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী কলাকুশলীদের ধন্যবাদ জানান।

বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের সিনেমা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের সময় বাঙালিরা সিনেমা করতে পারে বা করতে পারবে, এটা পাকিস্তানিরা সবসময় অবহেলার চোখে দেখতো। ১৯৫৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের সুযোগ পায়, হোসেন সোহরাওয়ার্দী তখন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য। তখন বাঙালিরা যেন সিনেমা তৈরি করতে পারে বঙ্গবন্ধু সেই উদ্যোগটা নিয়েছিলেন।

ভালো সিনেমাগুলোর দর্শকপ্রিয়তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত দিনে আমাদের অনেকগুলো সিনেমা তৈরি হয়েছে যেগুলো সত্যিই আন্তর্জাতিকমান সম্পন্ন। মানুষও কিন্তু সেগুলো লুফে নিয়েছে। সেভাবে আমাদের সবার কাজ করা দরকার।

অশ্লীলতা ও পাইরেসি বন্ধে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অশ্লীল চলচ্চিত্র নির্মাণ ও পাইরেসি বন্ধে একটা টাস্কফোর্স গঠন করা হচ্ছে। সেটা হলে এগুলো বন্ধ হবে।

Nagad

সিনেমায় অনুদান বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনুদান ভালো থাকলে আমি মনে করি আরও ভালো সিনেমা হবে।

চলচ্চিত্র শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা গুণী শিল্পীদের হাতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে তিনি এ পুরস্কার তুলে দেন। ২০২১ সালের সিনেমা থেকে এ বছর ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩৪টি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

এবারের আসরে চলচ্চিত্র শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন প্রখ্যাত অভিনয়শিল্পী ডলি জহুর ও ইলিয়াস কাঞ্চন। যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ ও ‘নোনাজলের কাব্য’। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক হয়েছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য)।

সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে পুরস্কার জিতেছে আকা রেজা গালিব পরিচালিত ‘ধর’ এবং সেরা তথ্যচিত্র বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে ‘বধ্যভূমিতে একদিন’। যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন মো. সিয়াম আহমেদ (মৃধা বনাম মৃধা) ও মীর সাব্বির মাহমুদ (রাতজাগা ফুল) এবং যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী নির্বাচিত হয়েছেন আজমেরী হক বাঁধন (রেহানা মরিয়ম নূর) ও তাসনোভা তামান্না (নোনাজলের কাব্য)।

‘নোনাজলের কাব্য’ চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীসহ সাতটি পুরস্কার জিতে নিয়েছে। পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা এম ফজলুর রহমান বাবু (নোনাজলের কাব্য), পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী শম্পা রেজা (পদ্মপুরাণ), খল চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা মো. আবদুল মান্নান জয়রাজ (লাল মোরগের ঝুঁটি), কৌতুক চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা প্রভাষ কুমার ভট্টাচার্য্য মিলন (মৃধা বনাম মৃধা), শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী আফিয়া তাবাসসুম (রেহানা মরিয়ম নূর), শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম (যৈবতী কন্যার মন), শ্রেষ্ঠ গায়ক কেএম আবদুল্লাহ-আল-মুর্তজা মুহিন (শোনাতে এসেছি আজ-পদ্মপুরাণ), শ্রেষ্ঠ গায়িকা চন্দনা মজুমদার (দেখলে ছবি পাগল হবি-পদ্মপুরাণ), শ্রেষ্ঠ গীতিকার প্রয়াত গাজী মাজহারুল আনোয়ার (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন), শ্রেষ্ঠ সুরকার সুজেয় শ্যাম (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন) পুরস্কার পেয়েছেন।

এ ছাড়া শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার নূরুল আলম আতিক (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা তৌকীর আহমেদ (স্ফুলিঙ্গ), শ্রেষ্ঠ সম্পাদক সামির আহমেদ (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক শিহাব নূরুন নবী (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক দলগত-সৈয়দ কাশেফ শাহবাজি, সুমন কুমার সরকার, মাজহারুল ইসলাম রাজু (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক শৈব তালুকদার (রেহানা মরিয়ম নূর), শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা ইদিলা কাছরিন ফরিদ (নোনাজলের কাব্য) এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।