গুলিস্তানে বিস্ফোরণ: সেই ভবনে বোম্ব ডিসপোজাল টিম, মৃত্যু ২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩:৩০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১১, ২০২৩

ছবি: শাহজালাল রোহান

রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ নিয়ে ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২৪ জনে। এদিকে সিদ্দিকবাজারের এই বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন কুইন টাওয়ারে কাজ করছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।

শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে সিটিটিসির উপ-পুলিশ কমিশনার মিশুক চাকমার নেতৃত্বে কাজ করছেন তারা।

এদিকে নিহত ব্যক্তির নাম মির্জা আজম (৩৬)। তিনি রাজধানীর হাতিরঝিল থানার মধুবাগ এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। আজমের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল থানার গোসিংগা গ্রামে।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইউব হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তার শরীরের ৮০ শতাশ দগ্ধ ছিল। তিনি জানান, এ নিয়ে ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় বার্ন ইউনিটে তিন জনের মৃত্যু হলো। এখনও চিকিৎসাধীন আছেন আরও সাত জন। তাদের মধ্যে একজন আইসিইউতে।

নিহতের পরিবার সূত্র সাংবাদিকদের জানান, ওই ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে বাংলাদেশ স্যানেটানি নামের একটি দোকানে চাকরি করতেন আজম। বিস্ফোরণে দগ্ধ হওয়ার পরে তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়।

পরিবারটি আরও জানায়, আজম এক সন্তানের জনক এবং তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা।

Nagad

এদিকে গত মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে সাত তলা একটি ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশের আরেকটি পাঁচ তলা ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরমধ্যে সাত তলা ভবনের বেজমেন্ট, প্রথম ও দোতলা বিধ্বস্ত হয়। আর পাঁচ তলা ভবনের নিচতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ভবনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের কার্যালয়। পরে সেখানে উদ্ধারকাজ চালায় ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট।

বিস্ফোরণের ফলে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছে রাজউক। ভবনটি ধসে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এজন্য এই ভবনে উদ্ধার তৎপরতায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। তবে ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে নাকি সংস্কার করা হবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে রাজউক দেড় মাস সময় নিয়েছে।

এদিকে ঘটনাস্থলে ভবনটির বেসমেন্টে দুই তিন ফুট পানি জমে আছে বলে জানিয়েছেন ওয়াসার লাইনম্যান আল আমিন।তিনি জানান, সেই পানি আপাতত মেশিন দিয়ে অপসারণ করা হচ্ছে। ভেতরে একটি সার্ভিস লাইন পেয়ে ওয়াসা সেটি বন্ধ করেছে। আর কোনো লাইন থেকে পানি বের হচ্ছে কিনা তা ভেতরের পানি এবং ভাঙাচোরা টুকরো ভরে থাকায় দেখা যাচ্ছে না।

অপরদিকে লালবাগের ডিসি জাফর হোসেন বলেছেন, লালবাগে সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে ভবনটি দোকান খোলার জন্য যথেষ্ট নিরাপদ কিনা। মামলার তদন্ত মূলত ডিবি করছে। অবহেলাজনিত হত্যার জন্য ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে। সেই সঙ্গে আসামিদের রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে বলেও জানান ডিসি জাফর।

সিটিটিসির ডেপুটি কমিশনার মিশুক চাকমা বলেছেন, পানি ও ভবন অনিরাপদ থাকায় এতোদিন ঘটনাস্থলের কাছে পৌঁছাতে পারিনি। এখন ভবন খানিকটা নিরাপদ এবং পানি অপসারণ করায় আমরা ভেতরে উৎপত্তিস্থলে ঢুকে তদন্ত করার চেষ্টা করছি। আলামত সংগ্রহ করতে আমাদের টিম ভবনের নিচে ঢুকবে।

গত মঙ্গলবার (৭ মার্চ) সিদ্দিকবাজারের একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।