মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম রাফসান জামান

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:৪৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৩, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন রাফসান জামান।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দেওয়া রাফসান জামান এক ঘণ্টা সময়ের ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৯৪ দশমিক ২৫ নম্বর পেয়েছেন। মেরিট স্কোর ২৯৪ দশমিক ২৫। মেধা তালিকায় প্রথম হিসেবে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

রাফসান জামানের বাড়ি রংপুর জেলায় হলেও তিনি চট্টগ্রামের হালিশহরে বেড়ে ওঠেন। তার বাবা একেএম শামশুজ্জামান সিটি গ্রুপ অব কোম্পানিজের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (শিপিং)। মা কাউসার নাজনীন গৃহিণী। এক বোন এক ভাইয়ের মধ্যে রাফসান ছোট।

বাবার কর্মস্থলের সুবাদে চট্টগ্রামেই পড়ালেখা শুরু তার। চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুল (সিজিএস) দিয়ে শুরুর পর সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে। এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া রাফসান জামান মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হলেন।

রাফসান জামান গণমাধ্যমকে বলেন, “আমাদের পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হওয়ার কারণে কিছুটা টেনশনে ছিলাম। পরীক্ষায় টিকব, সেটা আশা ছিল, কিন্তু অতটা ভালো হবে, তা কল্পনার বাইরে ছিল।”

রাফসান আরও জানান, আমার কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্টও নেই। পড়াশোনার কাজ বাদে কখনও মোবাইল ব্যবহার করতাম না। বেশি প্রয়োজন হলে বাবার মোবাইল ব্যবহার করতাম।

Nagad

তিনি বলেন, এইচএসসি পড়ার সময় থেকেই আমি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা পড়ালেখা করতাম। পাঠ্যবই বাদেও প্রচুর বই পড়তাম। একটা বিষয়ের শেষ পর্যন্ত বোঝার চেষ্টা করতাম। কখনও ঘড়ি ধরে না পড়লেও সকাল ও বিকেলে নিয়ম করে পড়তাম। রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঘুমিয়ে যেতাম।

তার বাবা-মা’র কৃতিত্বের কথা তুলে ধরে রাফসান বলেন, আমার পড়ার সময় মা টেবিলের পাশে বসে থাকতেন। কোনো কোনোদিন মা টেবিলেই মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়তেন। এমনকি রান্নাবান্নার ফাঁকে ফাঁকে এসেও আমার পড়ালেখার খোঁজখবর নিতেন মা।

রাফসানের বড় বোন সাদিয়া ইবনে রাইসা চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্য বিভাগে স্নাতক করেছেন। বড় বোনের মতো প্রকৌশলী না হয়ে রাফসান হতে চেয়েছেন চিকিৎসক।

তিনি বলেন, “আমি এইচএসসি পরীক্ষার পর থেকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। এজন্য একটি কোচিং সেন্টারে কোচিংও করি। এছাড়া গত ১০-১২ বছরের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন স্টাডি করেছি নিজে নিজে। নিজেকে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করার সবরকম চেষ্টায় করেছি। আমার চেষ্টা সফল হয়েছে। চিকিৎসাবিদ্যায় পড়তে পারব।”

উল্লেখ্য, চলতি বছর এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনকারীর সংখ্যা এক লাখ ৩৯ হাজার ২১৭ জন। এর মধ্যে পরীক্ষা দেননি ৩ হাজার ৪০৪ জন। পরীক্ষায় পাস করেছেন ৪৯ হাজার ১৯৫ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে মেয়ে ২৮ হাজার ৩৮১ জন এবং ছেলে ২০ হাজার ৮১৩ জন। মেডিকেলে মোট আসন ১১ হাজার ১২২টি। সেই হিসেবে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়ছেন ১২ জন পরীক্ষার্থী।

সারাদিন/১৩ মার্চ/এমবি