সুলতান’স ডাইনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালেন ভোক্তার ডিজি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩:২৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৩, ২০২৩

কাচ্চি-বিরিয়ানি বিক্রি করা প্রতিষ্ঠান সুলতান’স ডাইনকে খাসির পরিবর্তে অন্য প্রাণির মাংস ব্যবহারের অভিযোগ থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কোনো সত্যতা না পাওয়ায় এই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

সোমবার (১৩ মার্চ) জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়।

বিরিয়ানিতে খাসির মাংসের বদলে অন্য প্রাণীর মাংস দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর গত সপ্তাহে অভিজাত রেস্তোরাঁ সুলতান’স ডাইনে অভিযান চালায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষও প্রতিষ্ঠানটির গুলশান শাখায় অভিযান চালায়।

ওই অভিযানে সেখানকার কর্মীদের কথাবার্তায় সন্দেহ হয় ভোক্তার কর্মকর্তাদের। তাই আজ সোমবার পুরো বিষয়ের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য মাংস সরবরাহকারীসহ সুলতান’স ডাইন কর্তৃপক্ষকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। সকালে সুলতান’স ডাইন কর্তৃপক্ষ তাদের বক্তব্য দেয়। পরে সংবাদ সম্মেলন করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৯ মার্চ বিকেল আনুমানিক পৌনে ৪টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সুলতান’স ডাইনের গুলশান-২ শাখা সরেজমিনে তদন্ত করা হয়। আজ ১৩ মার্চ অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের পক্ষে জিএম, এজিএম এবং ওই শাখার ম্যানেজার শুনানিতে উপস্থিত হয়ে মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন। সরেজমিনে তদন্ত এবং অভিযুক্তের মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য পর্যালোচনায় নিচের তথ্য পাওয়া যায়।

১) অভিযুক্ত মা-বাবার দোয়া গোস্ত বিতান, কাপ্তান বাজার নামক ভেন্ডরের মাধ্যমে খাসির গোস্ত সংগ্রহ করে থাকেন।

Nagad

২) কাপ্তান বাজারে খাসি জবাই করার সময় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মাঝে মধ্যে উপস্থিত থাকেন।

৩) ভেন্ডর নিজ দায়িতে মাংস অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে পৌঁছায়।

৪) ৯ মার্চ অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মৌখিকভাবে ১৫০ কেজি খাসির মাংস সংগ্রহের কথা জানান। কিন্তু ভেন্ডর ১২৫ কেজি সরবরাহের কথা জানান।

৫। সন্দেহযুক্ত চিকন হাড়ের ব্যাপারে অভিযুক্ত জানান যে, ৭ থেকে ৯ কেজি ওজনের খাসির মাংস তারা ব্যবহার করেন এবং আকারে ছোট হওয়ায় এসব খাসির হাড় চিকন হয়।

৬) যে মোবাইল নম্বর থেকে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল তা বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনের শেষে সুপারিশ জানিয়ে বলা হয়, খাসি বাদে অন্য প্রাণির মাংসের ব্যবহার নিঃসন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সুলতান’স ডাইনকে অন্য প্রাণির মাংস ব্যবহারের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২ মার্চ রাজধানীর গুলশানে একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সাত প্যাকেট সুলতান’স ডাইনের কাচ্চি বিরিয়ানি কিনে আনেন। গুলশান শাখা থেকে আনা সেই বিরিয়ানি খাওয়ার একপর্যায়ে খাসির মাংস নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হলে তারা ওই শাখার নম্বরে কল করেন। পরে দুজন লোক নতুন খাবারের প্যাকেট নিয়ে আসেন। ওই সময় সেখানে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। পরে এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।